ভৈরব নদীতে ডুবে যাওয়া সার বোঝাই কার্গো জাহাজ উদ্ধার হয়নি

0
198

মফিজুর রহমান দপ্তরী

যশোরের অভয়নগরে ভৈরব নদীতে ডুবে যাওয়া সার বোঝাই কার্গো জাহাজ এখনো উদ্ধার হয়নি। দেখা মেলেনি উদ্ধার কাজের কোন অগ্রগতি।

তবে মালিক পক্ষের ভাড়া করা ডুবুরীদল স্থান পরিদর্শন করে আবার ফেরৎ গেছেন ঢাকায়। খোজ নিয়ে জানা গেছে, এনভি শারিব বাধন’র জাহাজটির মালিক বিআইডব্লিউটিএ’র কোন সহযোগীতা চেয়ে এখনও পর্যন্ত কোন চিঠি ইস্যু করেননি। ফলে বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে কোন প্রকার সহযোগীতা করতে পারছেনা।

খুলনা বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ সংরক্ষন ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো: আশরাফুল ইসলাম আরও জানান, জাহাজটির মালিক ব্যক্তিগতভাবে ডুবুরীদল এনে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করছেন। ডুবুরীদল পরিদর্শন করে গেছেন এখনও তাদের সাথে কন্টাক্ট করার ব্যাপার রয়েছে তার পর ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ে এস উদ্ধার অভিযান কবে শুরু করবে তা বলা যাচ্ছেনা।

তবে আমরা ওই স্থানটিতে লাল পতাকা ও সবুজ মার্কিং করা হয়েছে যাতে করে অন্যান্য কোন নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা না ঘটে। এদিকে জাহাজের মালিক বাবুল চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হয়ে তিনি জানান, আমি ডুবুরী দল পাঠিয়েছিলাম তারা পরিদর্শন করে ফিরে এসেছেন এখন আগামীকাল (আজ) সকালে তাদের সাথে বসে কন্টাক্ট করে উদ্ধার অভিযানে যেতে প্রায় ৫/৬দিন সময় লেগে যেতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আসলে বিআইডব্লিউটিএ এসব ব্যাপারে কোন হেল্প করে কি না আমার জানা নেই, আমাদের সম্পদ ডুবে আছে আমাদেরই দেখা লাগে, তবে আমি বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে যোগাযোগ করব। এ বিষয়টি নিয়ে এ উপজেলায় চলছে সমালোচনার ঝড়। তাছাড়া ও কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে সচেতন মহল দাবি করেছেন। সচেতন মহল জানিয়েছে, ভৈরব নদীতে ডুবে যাওয়া সার বোঝাই কাগো জাহাজ এখনো উদ্ধার না হওয়ার কারণে নদীর পানির সাথে রাসায়নিক সারের মিশ্রণ হুমকিতে ফেলবে জীব-বৈচিত্র এবং নদীপাড়ের মানুষের। তাছাড়া এই নদীর পানি ব্যবহারকারীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হবে তেমনি নৌযান চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়ে ক্ষতির মুখে পড়বে নওয়াপাড়ার মোকাম। ফলে দ্রুত ডুবে যাওয়া কার্গোজাহাজ উদ্ধার করা জরুরী। নওয়াপাড়া পীরবাড়ী ঘাট এলাকার বাসিন্দারা জানান, বুধবার সাড়ে ১২টার সময় এ এলাকায় এনভি শারিব বাধন নামক লাইটার জাহাজটি ৬৪০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার নিয়ে ডুবে যায়।

প্রথমে কয়েক জন শ্রমিক উদ্ধার কাজে নিয়োজিত থাকলে ও পরে তাদেরকে আর দেখা যায়নি। ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজ এনভি শারিব বাধন’র মাষ্টার সজিব হোসেন জানান, চট্রগ্রাম বন্দর থেকে ২১ জানুয়ারী ৬৪০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বোঝাই করে ২৫ জানুয়ারী ভোররাতে টোটাল ইমপোর্টার উদ্দেশ্যে নওয়াপাড়ার ভাটপাড়ায় আসে লাইটারটি। নওয়াপাড়া ফেরিঘাটের সঞ্জয় ট্রেডিং সার আনলোড না করার কারনে ভাটপাড়ায় ৪দিন অবস্থান করতে হয়। পরে সঞ্জয় ট্রেডিং অফিস থেকে বেঙ্গল মিল এলাকায় ঘাটে আনতে বলা হলে। আমরা কথামত বেঙ্গল মিল এলাকায় ঘাটে নিয়ে আসি। কিন্তু সেখানে কোন প্রকার আন-লোডের ব্যবস্থা না থাকায়।

এ সময় ঐ অফিসের লোকদের জাহাজ থেকে কিছু মাল নামানোর ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা কোন কর্ণপাত করেনি। পরে জাহাজটি পীর বাড়ি ঘাটে নিয়ে যায়। এ সময় জাহাজ হেলে পড়ে। পরে বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে হঠাৎ জাহাজের তলা ফেটে যায়। এরপর সেখানে জাহাজটির তলা ফেটে ডুবে যায়। জাহাজে থাকা ইউরিয়া সারের মূল্য প্রায় ১ কোটি ২ লাখ টাকা।

এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করার প্রস্তুতি চলছিল বলে জানিয়েছেন কার্গো জাহাজের মাস্টার। লোড আনলোডের কাজে নিয়োজিত মেসার্স সঞ্জয় ট্রেডিং এর মালিক সঞ্জয় কুমার জানান, উদ্ধার কাজের চেষ্টা চলছে এবং এ কাজে সহযোগিতা করছে বি আই ডব্লিউ টি এ। এবিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ সহকারী পরিচালক মো. মাসুদ পারভেজ বলেন, উদ্ধার কাজের চেষ্টা চলছে এবং প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

Comment using Facebook