যশোর অফিস
যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। উক্ত অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম, ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোমিনুল ইসলাম, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য এম. নাজিম আল কিরা, সমাজসেবক ফুলমিয়া পাটোয়ারী, জাহাঙ্গীর মিয়া, মোঃ মাসাদুর রহমান, মোঃ শামসুর রহমান। অভিযোগটি যশোর জেলা প্রশাসক, বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দাখিল করেছেন উক্ত ব্যক্তিরা। তারা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন ২০২১-২২ অর্থবছরে ১নং ওয়ার্ড নরসিংহপুর দক্ষিণপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মরহুম সামছের বিশ্বাসের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৪ টাকা, জহুরপুর ইউনিয়নের ৩নং বেতালপাড়া গ্রামের মোক্তার মোল্যার বাড়ি থেকে গরীবপুর রেজাউল মুন্সীর বাড়ি পর্যন্ত মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দকৃত ৬.৩১৪ মে.টন গম যার মূল্য ৩ লাখ টাকা, একই ইউনিয়নের ২নং পদ্মবিলা সেলিম মিয়ার বাড়ি থেকে রফিক মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দকৃত ৩.১৫৭ মে. টন চাল এবং ৭নং ওয়ার্ডের উত্তর চাঁদপুরের জাবেরের মোড় হতে মুক্তার মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত মাটি ভরাটের বরাদ্দকৃত ৩.১৫৭ মেঃ টন চাল বিক্রি করে বরাদ্দের পুরো টাকা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টুসহ ১নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর রহমান পাটোয়ারী এবং ১, ২, ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য শরিফা বেগম এবং ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য শরিফা বেগম টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, সরকারি অনুদানের বরাদ্দপ্রাপ্ত ১%-এর ২ লাখ ৫৩ হাজার ২শ’ ৩০ টাকা অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, বাঘারপাড়া শাখা থেকে উত্তোলন করেন। কিন্তু উক্ত টাকার কোন কাজ না করে প্রকল্পের সভাপতি ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি নারী ইউপি সদস্য শরিফা বেগম আত্মসাৎ করেন। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সের আদায়কৃত ৮ লাখ টাকার মধ্যে ৬ লাখ ২৫ হাজার ৪শ’ টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, জহুরপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড পদ্মবিলা ও দক্ষিণ সলুয়া কওমী মাদ্রাসা সংস্কারের জন্য ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। উক্ত টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা সংস্কার করার জন্য ঐ মাদ্রাসার সভাপতির কাছে হস্তান্তর করেন এবং অবশিষ্ট ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা এবং ওই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড উত্তর চাঁদপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদ সংস্কারের জন্য ৯৭ হাজার টাকার প্রকল্প বরাদ্দ হয়। উক্ত টাকা মসজিদ সংস্কারের জন্য চেয়ারম্যান ৫০ হাজার টাকা মসজিদের সভাপতির কাছে প্রদান করেন এবং অবশিষ্ট ৪৭ হাজার টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, জহুরপুর ইউনিয়নের অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচির ১ম বার ৪০ দিন ও ২য় বার ২৩ দিন মোট ৬৩ দিনের কাজের বিল দেখানো হয়েছে। কাজটি সম্পন্ন করার জন্য শ্রমিক সংখ্যা দেখানো হয় ১০৬ জন। চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু ৬০ জন শ্রমিক দিয়ে ৪৩ দিনে কাজটি সম্পন্ন করিয়েছেন। উক্ত কাজের বিল দেখিয়েছেন ৬৩ দিনের। অথচ চেয়ারম্যান ৪৩ দিনে কাজটি সম্পন্ন করে শ্রমিকদের ১০ লাখ ৩২ হাজার টাকা দেন এবং অবশিষ্ট ১৬ লাখ ৩৯ হাজার ২শ’ টাকা চেয়ারম্যান কতিপয় দুর্নীতিবাজদের নিয়ে আত্মাসৎ করেছেন বলে অভিযোগ কয়েকজন ইউপি সদস্য ও এলাকার লোকজন। শ্রমিকদের মোবাইল সিম চেয়ারম্যান তার নিয়ন্ত্রণে রাখেন। শ্রমিকরা সিম চাইতে গেলে চেয়ারম্যান তাদের সাথে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এছাড়াও চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু জন্ম নিবন্ধন, প্রত্যয়নপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশ কায়েম, নাগরিক সনদ তুলতে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। এর প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের খারাপ আচরণের শিকার হতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীদের। এসব অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টুর মুঠোফোন যোগাযোগ করে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য, কথা বলা হলে তিনি জানান, আমি চক্রান্তের শিকার একটি কুচক্রী মহল এসব মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে আমার সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছে। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক ও বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগীরা।
বাঘারপাড়া জহুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টুর বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
Comment using Facebook