নাওয়াপাড়া-মশিয়াহাটী সড়ক গিলে খাচ্ছে ঘের মালিকেরা!

0
117


আক্তারুজ্জামান
যশোর জেলার অভয়নগরের নওয়াপাড়া থেকে মশিয়াহাটী পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার সরকারি রাস্তা যা গিলে খাচ্ছে রাস্তাসংলগ্ন ঘেরগুলো। ভেড়িবাঁধ দিয়ে ঘের করার কথা থাকলেও ঘের মালিকরা সে বিধি নিষেধ মানছেনা। বেশির ভাগ ঘেরের পাড় তৈরি হয়েছে সরকারি রাস্তা ব্যবহার করে। স্বার্থান্বেষী এসব ঘের মালিকদের কারণে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি রাস্তাগুলো ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ঘেরের মধ্যে বিলিন হতে চলেছে। এ রাস্তায় বর্তমান কোন এ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে পারছেনা। বাস-ট্রাক, থ্রি হুইলার, মিনি ট্রাক, ট্রেগার চলাচল করতে পারছেনা। যেকারণে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এ রাস্তার পাশের গাছগুলো ঘেরের মধ্যে পড়ে মারা যাচ্ছে। পরে ঘের মালিকরা আবার সেগুলো কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে এলাকাবাসির অভিযোগ রয়েছে। এ রাস্তায় প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটছে। গতকাল সোমবার মণিরামপুর উপজেলার হাটগাছা মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের রাস্তায় সিমেন্ট বোঝাই ভ্যান পাশের ঘেরে পড়ে যায়। পাশের ঘেরটি একজন প্রভাবশালী আ’লীগ নেতা কাজল বৈরাগীর। যেকারণে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না। ইতিপূবে এ স্থানে ট্রাক, মোটরসাইকেল, ট্রেগার এ্যাম্বুলেন্স দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এছাড়া হাটগাছা নামক স্থানে ইকরাম হোসেন’র ঘের, হারান-বোদু’র ঘের, বিনোদ বৈরাগীর ঘের, পরেশ বাবু ঘের, সুজাতপুরের শ্যামল সিংহ এর ঘেরে এ রাস্তায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে। অভয়নগরের সরখোলা নামক স্থানে ইকবাল হোসেন’র ঘের, ইসমাইল এর ঘের, বাবুর ঘের, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এছাড়া ডুমুরতলা নামক স্থানে প্রকল্পের ঘের, আলাউদ্দীনের ঘের, আন্ধার জীবন বিশ^াসের ঘেরও ক্ষতি করছে। এব্যাপারে ঘের মালিক প্রভাষক কাজল বৈরাগী অত্যান্ত দম্ভোক্তির সাথে বলেন, আমার পাশের ঘের ইকরামের, সে ঘের তো আমার ক্ষতি করছে, ওই ঘের আমার ক্ষতি না করলে আমি রাস্তা ঠিক করে দেব। এব্যাপারে ঘের মালিক ইকরাম হোসেন বলেন, আপনারা একটু ভবদহ নিয়ে লেখেন ভবদহ ঠিক হয়ে গেলে রাস্তা ঠিক হয়ে যাবে। ভবদহের পানিতে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা রাস্তা ক্ষতি করছিনা বরং সংস্কার করছি। পরেশ বাবু বলেন, আমি প্রত্যেক বছর রাস্তা ঠিক রাখার জন্য মাটি দিয়ে থাকি। মণিরামপুর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, মণিরামপুরে রাস্তা সংলঘœ প্রায় ২শ’ মৎস্য ঘের রয়েছে। যে ঘেরগুলো রাস্তার ক্ষতি করছে। অভয়নগর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চলিশিয়া, পায়রা ও সুন্দলীতে রাস্তা ক্ষতিকারক প্রায় ১ হাজার মৎস্য ঘের রয়েছে। এব্যাপারে ঘের মালিক আলমগীর হোসেন বলেন, রাস্তা ঠিক রাখার জন্য তো আমরা চেষ্টা করছি। এব্যাপারে মণিরামপুরের ১৫নং কুলটিয়া ইউপি চেয়ারম্যন শেখর চন্দ্র রায় বলেন, যারা সরকারি রাস্তা নষ্ট করছে, তারা যদি রাস্তা ঠিক না করে দেয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এব্যাপারে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কবীর হোসেন বলেন, আপনি বিষয়টি জানালেন, খোঁজ-খবর নেব। ইতিপূর্বে ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে আপনার দপ্তরে অনেক অভিযোগ আছে বললে তিনি বলেন, এর কপি নিয়ে আসলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দীন বলেন, এখনতো ঘেরে পানি, পানি শুকালে ঘের মালিকদের বলে ব্যবস্থা করা যাবে।

Comment using Facebook