স্টাফ রিপোটার
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রইচ উদ্দীন দাখিল মাদ্রাসার সুপার তৎসময়ের সভাপতিসহ নিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তদের স্বাক্ষর জাল করে সহকারী শিক্ষক পদে নুর ইসলাম নামের ব্যক্তিকে ব্যাকডেটে ভূয়া নিয়োগ দিয়ে যোগদান দেখিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু এই নয় যোগদান দেখানোর পর প্রায় সাড়ে চার বছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে তার ছায়া না মিললেও বেতন ভাতা আশা মাত্রই দেখা মিলেছে তার।
প্রতিষ্ঠান সুত্রে ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে উক্ত মাদ্রাসার এমপিওতে আকষ্মিক ভাবে সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষক হিসাবে নুর ইসলামের নাম আসে। যার ইনডেস্ক নম্বর ২১২২৯৭০। এদিকে এমপিওতে হঠাৎ নুর ইসলামের নামে বেতন ভাতা আশায় হতবাক হয়ে পড়েন শিক্ষকরা। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ভাবে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই ভুয়া শিক্ষক নুর ইসলামের ভাই জামাল উদ্দীন স্থানীয় ভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ও টাকা পয়সা দিয়ে স্থানীয়দের ম্যানেজ করে ফেলে। শুধু এই নয় সুচতুর সুপার আবুল হাসান ও সভাপতি বিভিন্ন ছলছাতুরী কথাবার্তা বলে কৌশলে সকলের মুখ বন্ধ করে ফেলে।
স্থানীয়দের অভিযোগ সুপার আবুল হাসান ও সভাপতির যোগসাজসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা নিয়ে তৎসময়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশরাফ আলীর স্বাক্ষর জাল করে শয়লা গ্রামের প্রভাবশালী মৃত ইমান আলী দফাদারের ছেলে নুর ইসলামকে অতি গোপনে ভূয়া নিয়োগ করে ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর যোগদান দেখিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক প্রতিষ্টান কেন্দ্রিক অনেকেই জানিয়েছে, নুর ইসলাম নামক এই শিক্ষকের নামে বেতন আশার আগ পর্যন্ত কোন দিন প্রতিষ্ঠানে তার ছায়া দেখা যায়নি। অথচ এমপিও সিটে তার নাম দেখে আমরা হতবাক হয়েছিলাম।
এ বিষয়ে ২০১৫ সালের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বয়বৃদ্ধ আশরাফ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সময়ে নুর ইসলাম নামের কাউকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সুপার এ কাজ করতে পারে। তিনি আরো বলেন, আপনাদের বিশ্বাস না হলে কাগজ পত্রে দেখবেন আমার স্বাক্ষরে কোন মিল নেই। আমার জানা মতে আমার পূর্বে ও পরে নুর ইসলামের কোন শিক্ষক মাদ্রাসায় ছিলনা।
কথা হয় এ ঘটনার পুর্বের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজের সাথে তিনি বলেন, আমি যখন শুনলাম নুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তির এমপিওতে নাম এসেছে। তখন আমি বিষয়টি জানার চেষ্টা করি। কিন্তু এই নামের কোন শিক্ষকের খোজ পায়নি। তিনি বলেন, আমার জানামতে তার নামে ২০১৯ সালে বেতনবিল আশার আগ পর্যন্ত নুর ইসলাম নামের কোন শিক্ষক ছিলনা।
বিষয়টি নিয়ে সুপার মাওলানা আবুল হাসানের সাথে কথা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। তবে তিনি একটা কথা বলেছেন, তার নিয়োগ সঠিক আছে। ঐ সময়ের সভাপতি কথা জানালে তিনি বলেন কাগজ পত্র না দেখলে সেটা বলা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে ভুয়া নিয়োগকৃত শিক্ষক নুর ইসলামের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ পড়তে যাচ্ছে বলে সুত্রে জানা গেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।