সারের দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তায় মেহেরপুরের কৃষকরা

0
95


মেহেরপুর সংবাদদাতা
মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুরে গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান। গত বছর দুই বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছিলেন। এ বছর একজনের আরও এক বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন। চলতি বছর ধান আবাদের পরিধি বাড়ালেও লাভ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে মজিবর রহমানের। এ কৃষকের ভাষ্য, ‘হঠাৎ করে সরকার সারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন মনে হয় না সামনের দিনে কৃষি আবাদ করে চলতে পারবো। ধান উৎপাদনের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়ছেই। অথচ আমরা ধান বিক্রি করতে গেলেই দাম কমে যায়। আমাদের নিয়ে সরকারের কোনো ভাবনা নেই।’ শুধু মজিবর রহমান নয়, সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন মেহেরপুরের কৃষকরা। তারা বলছেন, ধান উৎপাদন করে খুব বেশি লাভ হয় না। এ বছর বোরো ধান করে মোটামুটি সবাই লোকসানের মধ্যে রয়েছেন। এ অবস্থায় সারের দাম বৃদ্ধি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে। সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর ধান চাষের জন্য দেড় বিঘা জমি প্রস্তুত করেছি। কাঠাপ্রতি জমিতে কমপক্ষে ৩-৪ মণ করে ধান হয়। বিগত সময়ে ধান উৎপাদন করে লাভ হলেও এবার সারের দাম বাড়ায় লাভের চেয়ে ক্ষতির শঙ্কা বেশি।’ একই উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের কৃষক এরশাদ আলী বলেন, ‘আগে সার ৮০০ টাকা বস্তা ছিল। এখন ১ হাজার ১০০ টাকায় কিনতে হবে। আরও তো অন্যান্য অনেক খরচ রয়েছে। তারপর এ বছর বৃষ্টি নেই। এখন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। বুঝতে পারছি না কীভাবে কৃষিকাজ করে সংসারের খরচ এবং ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাবো।’ সারের দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তায় মেহেরপুরের কৃষকরা সরকার সারের দাম বাড়ানোর পর থেকে বাজারে সার পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন কৃষক আহসান হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘যত সমস্যা কৃষককে নিয়ে। সবকিছুর দাম বাড়ে, কিন্তু ধানের দাম বাড়ে না। তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চলবে? সেটা সরকারকে ভাবা উচিত।’ চলতি বছর জেলায় ২৬ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ পর্যন্ত পূরণ হয়েছে ২৬ হাজার ৩৬৫ হেক্টর। গতবছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ১৭০ হেক্টর। মেহেরপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামসুল আলম বলেন, ‘সারের দাম বাড়লেও কৃষকদের লোকসান হবে না। কারণ এখন উন্নত জাতের বীজ রয়েছে। এসবে প্রচুর ধান হয়। এছাড়া সরকার কৃষকদের সহযোগিতা করছে।’

Comment using Facebook