অভয়নগরে অঅভয়নগরে অবৈধ ইউনিক ডায়গনস্টিক সেন্টার মানছেনা সরকারী নিয়ম

0
121


স্টাফ রিপোর্টার
যশোরের অভয়নগর হাসপাতালের অদূরে গড়ে উঠা ইউনিক ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারে মানা হচ্ছেনা সরকারী নিয়মনীতি। অবৈধ এ প্রতিষ্ঠানে সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে রোগী দেখছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারেরা। এ প্রতিষ্ঠানের চাকচিক্যের আড়ালে প্রতিনিয়ত চলছে রোগীদের সাথে প্রতারণা। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া স্ব্যাস্থ্য বিভাগকে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের গলাকাটা ব্যবসা। অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সাদিয়া জাহান তার প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে হাসপাতালের অন্যান্য ডাক্তারদের ওই ডায়াগনস্টিকে রোগী দেখতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমতবস্থায় ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা। তারা জানান, ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেসব ডাক্তাররা চেম্বার করেন, তারা যখন হাসপাতালে বসে রোগী দেখেন তখন ওই ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে যাবতীয় টেস্ট করাতে নির্দেশ দেন। অন্য কোথাও থেকে করালে তাদের আবার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেক সময় রিপোর্ট আবার নতুন করেও করানো লাগে বলে অভিযোগ রয়েছে। ডাক্তারদের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত টেস্ট লিখে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই কোন মাথা ব্যাথা। মাঝে মাঝে নামকাওয়াস্তে অভিযান পরিচালনা করলেও নেয়া হয়না কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। অভয়নগরবাসীর প্রশ্ন এসব ভূয়া প্রতিষ্ঠান প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে কার্যক্রম চালায়? তাছাড়া গত রবিবার স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার আহমেদুল কবির জানান, অনিবন্ধিত কোন হাসপাতাল-ক্লিনিকে কোন চিকিৎসক কাজ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। শুধু তাইনা নিবন্ধনহীন কোন প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম চালাতে পারবে না বলে জানানো হয়। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের এমন বার্তা উপেক্ষা করে অভয়নগরের অবৈধ ইউনিক ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে ডাক্তাররা রোগী দেখছেন সাধারণ মানুষের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিক ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের ২য় তলায় ১০৬নং কক্ষে দুজন ডাক্তার বসে আছেন। একজন ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিচয়দানকারী অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সাদিয়া জাহান, অপরজন একই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. গোবিন্দ পোদ্দার। এভাবে একটি অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখার বৈধতা আছে কিনা জানতে চাইলে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন ঐ দুই মেডিকেল অফিসার সাদিয়া জাহান ও গোবিন্দ পোদ্দার। তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে তাৎক্ষনিক উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হুমকি দেয় অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসময় সাংবাদিকদের চেম্বার থেকে বের করে দেয়ার জন্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের নির্দেশ দেন সাদিয়া জাহান। অন্য একজন সাংবাদিকদের আটকে রাখাতে গেট বন্ধ করার নির্দেশ দেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং ছবি তুলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় তারা। হাসপাতালের ডাক্তাররা অবৈধ ডায়াগনস্টিকের চেম্বারে বসে রোগী দেখছেন আবার সাংবাদিকদের আটকে রাখতে নির্দেশও দিচ্ছেন। পরবর্তীতে ইউনিক ডায়াগনস্টিক নিয়োগকৃত দালালদের একজনকে দিয়ে ম্যানেজ করাতেও চেষ্টা করেন। এমনিক ওই দালাল সাংবাদিকের বাসা পর্যন্ত যায়। অনেক অনুনয় বিনয় করে বলেন, প্রায় ৪ কোটি টাকা খরচ করে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি করা হয়েছে। আপনারা যদি নিউজ করেন তাহলে সরকার বন্ধ করে দিবে। এছাড়া ইউনিক ডায়াগনস্টিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিচয় দানকারী সাদিয়া জাহান মালিক পক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে ডাক্তাররা অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চেম্বার করতে পারবে কি না জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, আগে অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক বন্ধ করতে হবে তারপর ডাক্তারদের বসা না বসা দেখা যাবে। এব্যাপারে যশোর জেলা সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, আমরা সরকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করব। যারা নিয়মের বাহিরে রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Comment using Facebook