স্টাফ রিপোর্টার
অভয়নগরে ভূয়া কাগজে বিয়ে করে যৌতুকের দাবীতে লাকী আক্তার (১৭) নামের এক স্কুল ছাত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের চন্দনগাতী গ্রামের আকরাম খানের ছেলে লম্পট শাকিল। ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার মাথায় হাতে ও গলার নিচে মোট ৯টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার দুপুরে চন্দনগাতী গ্রামের জিকরির বাড়িতে। তারা জিকরির বাড়িতে বেশকিছুদিন যাবত বাসা ভাড়া থাকতো বলে জানা গেছে। নির্যাতনের শিকার তরুনী সিদ্ধিপাশা পিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী।
জানা যায়, উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের আকরাম খানের ছেলে বখাটে শাকিল কিছুদিন পূর্বে একই গ্রামের ইকরাম মুন্সির মেয়ে লাকি আক্তারকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হলে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলে। লাকি আক্তারের বাড়িতে কেউ না থাকায় একদিন তার বাড়িতে চলে আসে লম্পট শাকিল, পরে তাদেরকে অপ্রীতিকর অবস্থায় দেখে ফেলে লাকির বড়ভাই রমজান। ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটে শাকিলকে চড় থাপ্পড় দিলে দৌড়ে পালায় সে। ভুক্তভোগী লাকি জানান, এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে কিছুদিন আগে বিয়ে করার প্রলোভন দিয়ে বাড়ি থেকে খুলনা নিয়ে নোটারি পাবলিক ও হলফকারী কর্তৃপক্ষের কার্যালয় থেকে বিবাহের এফিডেভিট করে সংসার শুরু করে। কিছুদিন যেতে না যেতেই লাকি আক্তারের উপর নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ।
প্রকাশ হয় একাধীক নারীর সাথে শাকিলের অনৈতিক সম্পর্কের চিত্র। প্রতিনিয়ত মারধর ধুমকি ধামকিসহ ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে শাকিল। কৃষক পিতার পক্ষে কোন টাকা দেওয়া সম্ভব না বলা হলে বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার ফোনে অন্য নারীর সাথে কথা বলাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডা শুরু হলে ঘরের দরজা বন্ধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্যেশ্যে জখম করে ও আটকে রাখে। পরে স্থানীরা উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ভুক্তভোগী লাকি আক্তারের পিতা ইকরাম মুন্সি জানান, ওরা প্রভাবশালী হওয়ায় ওদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। আমি এ ঘটনার সুষ্টু বিচার দাবী করছি। অভয়নগর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাজ কুমার পাল জানান, নোটারী পাবলিকের যে কাগজপত্র দিয়ে বিবাহ হয়েছে তা সম্পুর্ন ভুয়া। এব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।