আল-আমীন গোলদার, বটিয়াঘাটা (খুলনা)
বটিয়াঘাটা উপজেলার গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘ছুটির ঘন্টা’ সিনেমাকে হার মানিয়েছেন শিক্ষকদের অবহেলার কারণে। ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র পরশ সরকার (১০) এর আতœ চিৎকারে ২ ঘন্টা পরে ক্লাসের তালা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার। তখন দেখা যায় ছেলেটি বমি ও প্যান্ট ভরে প্রোসাব করা অবস্থায় কান্নাকাটি করছে। পরে তাকে উদ্ধার করে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। এবিষয় গঙ্গারামপুর গ্রামের পরশের পিতা প্রদিপ সরকার গত ৬ জুন ঘটনার সঠিক তদন্ত পুর্বক দোষীদের শাস্তির দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত পুর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রেরণ করেন। লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, প্রদিপ সরকারের পুত্র পরশ সরকার (১০) উপজেলার গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র। গত ২রা জুন ১১ টার সময় সে স্কুলে যায়। স্কুলের ক্লাস চলাকালীন সময়ে সে বেঞ্চের উপর ঘুমিয়ে পড়ে। স্কুল ছুটি শেষে শিক্ষক সুনিল মহালদার, আজাদ হোসেন, কৃষনা ও সুবর্ন’র অবহেলা করে স্কুলের ছোট ছোট ছাত্র ছাত্রীদের দিয়ে ক্লাসরুমে তালা দিয়ে স্কুল ছুটি দেয়। স্কুল ছুটির ২ ঘন্টা পরে পরশ নামের ঐ চতুর্থ শ্রেনির ছাত্র হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে দেখে ক্লাসের দরজা জানালা বন্ধ। এসময় তার চিৎকার চেচামেচি আওয়াজ শুনে এলাকার লোকজন উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে চাবি এনে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। ভয়ে সে বমি করে ও নিজের প্যান্টে প্রসাব করে। এবিষয় ছেলেটার বাবা প্রদিপ সরকার বলেন, শিক্ষকের অবহেলার কারণে যদি আজ আমার বাচ্চাটার কিছু হতো তাহলে সে দায় দায়িত্ব কে নিতো। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাচ্চাটি রোগাক্রান্ত। প্রায় সময় সে ক্লাসে অসুস্থ থাকে। ক্লাসে এসে ঘুমায়। এলাকার তপন সরকার বলেন, স্কুলে বাচ্চাদের লেখা পড়া করানোর পরিবেশ নেই। শিক্ষককে অব্যস্থাপনা কারনে স্কুলের পরিবেশ নষ্ট। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী মহিলা শিক্ষক কৃঞ্চা রানী দাস ক্লাসে এসে শুধু ফোনে কথা বলা নিয়ে বিজি থাকেন। অনেকে বলেন, মহিলা শিক্ষক ক্লাস বাদ দিয়ে ফোনে প্রেম আলাপ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ কামরুল শেখ বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমি বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই। আটককৃত ছাত্র পরশের পিতা প্রদীপ সরকার বলেন, আমার ছেলেকে ২/৩ ঘন্টা পর স্কুলের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করি। আমার ছেলের শারীরিক অবস্থা ভালো না। ভয়তে রাতে আচমকা কেপে উঠছে। মাঝে মধ্যে সে ভয়তে কেপে কেপে উঠেছে। পরে তাকে বটিয়াঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করি। বতর্মান আমার ছেলেকে একটি কবিরাজের কাছে পাঠিয়েছি। আমি উক্ত ঘটনার সঠিক ন্যায় বিচার চাই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুলিন মহলদার বলেন, ঘটনাটি একটি তুচ্ছ ঘটনা। এটা তেমন কোন বিষয় না। বিষয়টি উপজেলা টিও’র স্যারের সাথে কথা বলে সমাধান করবো। প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন,আমি ঘটনাটি তদন্তের জন্য স্কুলে এসেছি। দেখি বিষয়টি তদন্তে কি পাওয়া যায়
বটিয়াঘাটায় ক্লাসরুমে ঘুমিয়ে গেল শিক্ষার্থী : তালাবদ্ধ রেখে স্কুল ছুটি : দুই ঘন্টা পর উদ্ধার
Comment using Facebook