সাকিরুল কবির রিটন, যশোর
যশোর সদর উপজেলার তালবাড়িয়া ও শহরের বকচর এবং রুপদিয়া এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ ভেজাল মোবিল এবং ভেজাল সার কারখানা। এই এলাকার চিহ্নিত একটি সিন্ডিকেট পোড়া মোবিল জ¦ালিয়ে রিফাইন মোবিল তৈরী করার পাশাপাশি বিভিন্ন নামীয় দামী মোবিল কোম্পানীর নামক মোড়ক তৈরী করে পাত্রে ভরে অবাধে বিক্রি করছে। যার ফলে ভেজাল মোবিল ব্যবহার করে বিভিন্ন যানবাহন হারাচ্ছে তাদের ইঞ্জিনের কার্যকারিতা। অথচ সব সময় ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে ভেজাল মোবিল উৎপাদনকারী সিন্ডিকেট গুলো।
বছর কয়েক পূর্বে র্যাব-৬ ও ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান বকচর এলাকায় চললেও তালবাড়িয়া গ্রামে গড়ে ওঠা মোবিল কারখানায় অভিযান না চালানোর ফলে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। তাল বাড়িয়ায় গড়ে ওঠা ভেজাল মোবিল কারখানার মালিক সামাউল ইসলাম ইমন বিভিন্ন কৌশল নিয়ে সব সময় থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। অবৈধ ও ভেজাল মোবিল কারখানার মালিকেরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজস করে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কারবার।
স্থানীয় সূত্রগুলো অভিযোগ করেছেন, যশোর সদর উপজেলার ৪নং নওয়াপাড়া ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামে সামাউল ইসলাম ইমন অবৈধভাবে কাগজপত্র বিহীন গড়ে তুলেছে ভেজাল মোবিল কারখানা ও ভেজাল দস্তাসার কারখানা। সম্পূর্ন অবৈধ ও পরিবেশ ধ্বংসকারী ভেজাল মোবিল ও সার কারখানায় প্রতিনিয়ত তৈরী হচ্ছে মোবিল ও ভেজাল দস্তা সার।
ভেজাল মোবিল কারখানায় আজ পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান না চালালেও ভেজাল সার কারখানায় মাস কয়েক পূর্বে যশোর সদর উপজেলার কৃষি বিভাগ অভিযান চালিয়ে কারখানাটি সীলগালা করে দিলেও তিনি কৃষি অফিসের সীলগালাকে তোয়াক্কা না করে পুনরায় খুলে আবার তৈরী করছে ভেজাল সার। সূত্রগুলো বলেছে, ইমন তার ভেজাল মোবিল কারখানায় প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষন বস্তু জ¦ালিয়ে বিভিন্ন গ্যারেজ থেকে সংগ্রহকৃত পোড়া মোবিল জ¦ালিয়ে রিফাইন মোবিল তৈরী করছে। যে মোবিল সে বিভিন্ন দোকানে ব্যারেল ব্যারেল বিক্রি করছে। ইমন ভেজাল মোবিল তৈরী করার পাশাপাশি ভেজাল সার উৎপাদন লাভ জনক ব্যবসা হওয়ায় সে ভেজাল দস্তাসার তৈরীর কারখানা সৃষ্টি করে সেখানে প্রতিনিয়ত ভেজাল সার তৈরী করে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে বিক্রি করে থাকে।
সরকারের কোন দপ্তরের কোন আবেদন ও অনুমোতি ব্যতিত নিজের ইচ্ছে মাফিক ভেজাল মোবিল ও সার তৈরী করছে। যে কারণে সে তালবাড়িয়া গ্রামে ভেজাল মোবিল ও সারের মালিক হিসেবে বেশ পরিচিত। অপরদিকে, শহরের বকচর ও রুপদিয়া এলাকায় গড়ে উঠেছে ভেজাল মোবিল তৈরীর কারখানা। শহরের বকচর এলাকায় ভেজাল মোটা সেলিমসহ একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট পরিবেশ দূষণ করে তৈরী করছে অবৈধ ভেজাল মোবিল। যে মোবিল যশোর শহরের আরএন রোড, বকচর, বারান্দীপাড়া ঢাকা রোডসহ শহরের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করে থাকে। ভেজাল মোবিল দেশের বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবিল কোম্পানীর লেভেল ও স্টিকার এবং পাত্রে পুরে বাজারজাত করছে অসাধু দোকান্দারগন। যে মোবিল ব্যবহার করে ইঞ্জিনচালিত বিভিন্ন যানবাহন অল্প সময়ের মধ্যে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌছে যাচ্ছে। এছাড়া, সদর উপজেলার রুপদিয়া জামতলায় ছোট সেলিম ও কামরুল নামে দু’জন ভেজাল মোবিল কারখানা সৃষ্টি করে অবাধে কারবার চালাচ্ছে।
প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকে ভেজাল মোবিল কারখানায় পোড়া মোবিল দিয়ে সর্ম্পূণ অবৈধ ভাবে রিফাইন মোবিল তৈরী করলেও ওই এলাকার জনসাধারণ হতবাক হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে সামাউল ইসলাম ইমন ও ছোট সেলিমের কাছে সাংবদিকরা তাদের বিরুদ্ধে ভেজাল মোবিল ও সার উৎপাদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বিভিন্ন ভাবে এড়িয়ে যান। ছোট সেলিম ও কামরুল যশোরের প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তাদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে বলে সূত্রগুলো দাবি করেছেন। অবিলম্বে এ সব অবৈধ মোবিল এবং সার কারখানায় অভিযান না চালালে সিন্ডিকেট গুলো আরো বেপরোয়া হয়ে পড়বে বলে যশোরের সচেতন মহল মনে করছেন।