যশোর অফিস
ঈদ উপহার পেয়ে দু’চোখের অশ্রু। জীবনে উপহারতো তো দূরের কথা একটা শুভেচ্ছা বার্তাও পাননি যারা তারাই এবার পেলেন ঈদ উপহার। এবার সয়ং প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে। আজ তারা দু’শতক জমির দলিলসহ পাকা বাড়ি মালিক। মুজিববর্ষের এমন ঈদ উপহার পেয়ে খুশির অনুভূতি ঝরল দু’চোখের অশ্রু হয়ে।
ঘর পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বলেন প্রধানমন্ত্রীকে তারা ভার্চুয়াল পর্দায় নয়, দেখতে চান তাদের নিজের বাড়িতে। যেটি প্রধানমন্ত্রী উপহার দিয়েছেন। এক সময় নিজের বাড়ি ছিলো না বলে কাউকে বাড়িতে আসতে বলতে সংকোচ বোধ করতেন। এবার তারা নিজের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেন প্রধানমন্ত্রীকে।
তাদের এই সহানুভূতির বহিঃপ্রকাশ ছুঁয়ে গেলো গণভবণে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রীকে তেমনি যশোর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপস্থিত জেলা প্রশাসকসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের মাঝে।
দেশের ৩২ হাজার ৯শ’ চার জনের মধ্যে যশোর জেলায় তিনশ’১৮টি আর সদর উপজেলার ৮১ জনের সম অনুভূতি আবেগ তাড়িত করে সবাইকে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের ৩২ হাজার নয়শ’ চারটি ঘর হস্তান্তর করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। শতভাগ ঘরও দেব। দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না, ঠিকানাবিহীন থাকবে না। একটা ঘর পেয়ে মানুষ যখন হাসে তখন সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটাই তো চেয়েছিলেন। যশোর সদর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।
উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মুনিম লিংকন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুস সবুর হেলাল, আফজাল হোসেন দোদুল, উপজেলা ভাইস চেয়াম্যান জোৎস্না আরা মিলি ও আনোয়ার হোসেন বিপুল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম মিকাইল হোসেন। যশোর জেলায় তৃতীয় ধাপে ছয়শ’ দশটি ঘর নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে তৃতীয় ধাপে হস্তান্তর করা হলো তিনশ’১৮টি ঘর। যার মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ৮১, বাঘারপাড়ায় ৫, অভয়নগরে ২৮, মণিরামপুরে ৪৮, কেশবপুরে ৬১, ঝিকরগাছায় ৪১, চৌগাছায় ৪৮ ও শার্শায় ছয়টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। দু’শতক জমির দলিল, নামজারির খতিয়ানসহ সুদৃশ্য রঙিন টিনের ছাউনিযুক্ত দু’কক্ষ বিশিষ্ট থাকার ঘর, রান্নাঘর, টয়লেট ও ইউটিলিটি স্পেসসহ প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পেয়ে রূপদিয়া হাটবিলার ভ্যানচালক নিজাম উদ্দীন ও আলেয়া বেগম, নরেন্দ্রপুরের কাঞ্চনবালা রণজিৎ দাস দম্পত্তি, চাউলিয়ার শারমিন আক্তার, তাসলিমা বেগম, আয়রা খাতুন, শিরিনা বেগমদের মুখের অনাবিল হাসিই বলে দেয় এই প্রাপ্তি তাদের জীবন কতটা বদলে দিয়েছে।