ডুমুরিয়া (খুলনা) সংবাদদাতা
ডুমুরিয়ার চুকনগর দিব্য পল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুকুরের তলদেশে বোরিং করে পাম্প মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। পুকুরের তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করায় আশপাশের বসবাসকারীরা তাদের দোকানপাট ও বসতঘর ধ্বসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। এছাড়া স্যালো মেশিনের প্রকট শব্দ ও কালো ধোয়ায় পরিবেশ দূষন হয়ে পড়ছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন অবগত থাকলেও তারা কোন আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও শনিবার সরেজমিনে যেয়ে জানা ও দেখা গেছে, ডুমুুরিয়া উপজেলার চুকনগর দিব্য পল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে ১০ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দিয়েছেন। যার মূল্যমান প্রায় ২ লাখ টাকা। নীচু মাঠ ভরাটের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাঠের পার্শ্ববর্তি ভরাট হওয়া পুকুর খননের পরিবর্তে কম খরচে ওই পুকুর থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে মাঠ ভরাট করছে। সরেজমিনে গেলে পুকুরের পূর্ব ও দক্ষিন পাড়ে বসবাসরতরা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্যে ভরাট হওয়া পুকুর খনন করে সেই মাটি দিয়ে ভরাট করা হলে এক সাথে পুকুর খনন হতো অন্যদিকে মাঠও ভরাট হতো। কিন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ পুকুরের তলদেশ থেকে বোরিং করে বালু উঠানোর ফলে একদিকে যেমন পুকুরের পাড়ে থাকা রাস্তা, দোকানপাট ও বসত ঘর ধ্বসের আশংকা দেখা দিয়েছে অপর দিকে বিকট শব্দে স্যালো মেশিন চললেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পকুরের পাড়ে স্কুলের জায়গার দোকানঘর ভাড়াটিয়া ও পার্শ্ববর্তি বাড়ির মালিকরা জানান, সরকার দলীয় স্থানীয় প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতা স্কুলের দায়ীত্বশীল পদে থাকায় এবং অনেকেই স্কুলের জায়গায় দোকান ভাড়াটিয়া হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, মাঠ ভরাটের কাজটি মুলত স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাহেব তদারকি করছেন। পুকুর থেকে বালি তোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি নিয়েছেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুকুর থেকে স্যালো মেশিন দিয়ে বালু নয় কাদামাটি (পেইড়) তুলে মাঠ ভরাট করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: আশরাফ হোসেন বলেন, দিব্য পল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নীচু মাঠ ভরাটের জন্য ১০ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।বালি বা মাটি দিয়ে সে স্থান ভরাট করতে হবে। কিন্ত তার অর্থ এই নয় যে,অবৈধ পন্হায় মাটি বা বালু এনে তা ভরাট করতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি)ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মামুনুর রশীদ বলেন, ইতোমধ্যে বিষয় আমার নলেজে আসার পর আমি স্হানীয় বয়ারশিং ভূমি অফিসের নায়েবকে পাঠিয়ে বালু উত্তোলন বন্দের নির্দেশ দিয়েছিলাম। তার পরও যদি বালু তোলা বন্দ না হয়ে থাকে তা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।