সাতক্ষীরা সংবাদদাতা
শ্যামনগরে শ্বশুরবাড়ির পরিত্যক্ত রান্না ঘরের ভিতর থেকে জামাই এর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গাঙআটি গ্রামের শ্বশুর মৃত সুরাত আলী সরদারের বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত জামাই আসাদুজ্জামান তাছের (২৫) একই ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের নুর হোসেন গাজীর ছেলে। নিহত তাছেরের স্ত্রী মারুফা খাতুন জানান, নিজেদের মধ্যে সাংসারিক দ্বন্দের জেরে গত ৪ মাস আগে তার স্বামী তাকে মৌখিকভাবে তালাক দেয়। এরপর গত সপ্তাহে তিনি (মারুফা) নিজেই তাকে তালাকনামা পাঠাই। সকালে তার বড় বোনের রান্না ঘরের মধ্যে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখে তাকে খবর দেয়। এঘনার আগে তার সাথে তার কোন কথা হয়নি বলে তিনি জানান। তাছেরের বড় শালিকা ছকিনা খাতুন জানান, সকালে সূর্য ওঠার সময় তিনি তার পরিত্যক্ত রান্না ঘরটি গোছাতে গিয়ে ঘরের মধ্যে একজনকে ঝুলে থাকতে দেখে ভয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠেন। চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে পুলিশ এসে তাছেরের মরদেহ উদ্ধার করেন।
কিন্তু কখন কিভাবে সে এখানে এলো তা তিনি জানেননা বলে আরো জানান। তাছেরের বোন খাদিজা ও মামী রহিমা খাতুন জানান, তাছেরকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন জোর করে দুইবার স্বামী পরিত্যক্ত হওয়া গর্ভবতী নারী মারুফার সাথে বিয়ে দেন। এরপর থেকে তারা তাকে মারপিটসহ নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করতেন। ওরা তাছেরকে মেরে ফেলেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসহাক আলী জানান, শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাছেরকে প্রায়ই সময় মারপিট করতেন। মরদেহ দেখে মনে হচ্ছে না যে এটা আত্মহত্যা। কোন না কোন রহস্য অবশ্যই রয়েছে। নিহত তাছেরের পিতা নুর হোসেন গাজী জানান, কয়েক দিন আগে তার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারপিট করে তার ফোন ও টাকা পয়সা কেড়ে নিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। গতকাল ওই ফোন আনতে গিয়ে সে আর ফিরে আসেনি। আজ তিনি খবর পাচ্ছেণ তার ছেলে মারা গেছেন। তিনি আরো জানান, তার ছেলেকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার দিচ্ছেন।
শ্যামনগর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহাবুর রহমান জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শ্যামনগর থানর ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর তার মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে।