যশোরে সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ায় বাধা ও মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা

0
211

সাকিরুল কবির রিটন, যশোর

গর্ভের সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ায় বাধা এবং তার মৃত্যু ঘটানোর উদ্দেশ্যে চিকিৎসাপত্র দেয়ার অভিযোগে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও অসিম ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার বাঘারপাড়া উপজেলার পাঠান পাইকপাড়া গ্রামের শাওন মাহমুদ এই মামলা করেন।

বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: মঞ্জুরুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দিয়েছেন। আসামিরা হলেন, অসিম ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডাক্তার নিলুফার ইয়াসমিন এমিলি, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমাজিং ডাক্তার আবু সাইদ ও কনসালটেন্ট ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি ডাক্তার একেএম আব্দুল আওয়াল। বাদী শাওন মাহমুদ মামলায় বলেছেন, বাঘারপাড়া উপজেলার খলসি গ্রামের রবিউল ইসলামের সাথে বাদীর বোন নাজমুন নাহার সুমিকে ২০০৭ সালে মুসলিম পারিবারিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়। দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে তাদের সন্তান না হওয়ায় ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে বিভিন্নস্থানেরমত যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের অসিম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তার নিলুফার ইয়াসমিন এমিলির কাছে আসেন। একই বছরের ৪ নভেম্বর ও চলতি বছরের ১৭ মার্চ আবারো ডাক্তার এমিলির কাছে আসেন।

এসময় রোগীর গতিবিধি লক্ষ্য করে ডাক্তার এমিলির পরামর্শে অন্য দুই আসামির মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বাদীর বোনের গর্ভে সন্তান ধারণ করেছে বলে ঘোষণা দেন। ওই সময় ৫ সপ্তাহ ৬দিন ওই সন্তানের বয়স হয়েছে এবং চলতি বছরের ১১ নভেম্বর সন্তানটি ভুমিষ্ট হতে পারে বলে সম্ভাব্য তারিখ ঘোষনা করেন। হঠাৎ করে গত ২৯ মার্চ রোগীর ব্লি¬ডিং হওয়ায় ডাক্তার এমিলির কাছে আসার পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আবারও অসুস্থ্য হওয়ায় ৩১ মার্চ ডাক্তারের কাছে আসেন সুমি এবং তার স্বামী রবিউল ইসলাম।

এসময় আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য ডাক্তার আবু সাইদ এবং প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য ডাক্তার আব্দুল আওয়ালের কাছে পাঠান ডাক্তার এমিলি। আলট্রাসনো এবং প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টে এক নম্বর আসামি এমিলি বলেছেন যে সুমির গর্ভের সন্তান গর্ভপাত হয়ে গেছে। এরপর গর্ভবতী সুমিকে ওই অসিম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করে চারদিন ধরে পুরোপুরি গর্ভপাত ঘটানোর জন্য চিকিৎসা প্রদান করেন এমিলি। এতে করে গর্ভবতী সুমি মৃত্যু শয্যায় অপেক্ষা করতে থাকেন। এরই মধ্যে বাদীর আত্মীয় স্বজনেরা অসিম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসে সুমিকে দেখে এক পর্যায় জোর করে কুইন্স হাসপাতালে নিয়ে যান। কুইন্স হাসপাতালে গাইনী কনসালটেন্ট ও সার্জন ডাক্তার নারগিস আক্তার দেখে ডাক্তার হাসিনা আক্তার খাতুন ও কানিজ ফাতেমার মাধ্যমে আবারো আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। সেখানকার পরীক্ষা এবং ডাক্তার নারগিস আক্তারের নিবিড় পর্যবেক্ষণে জানা যায় সুমির গর্ভের সন্তান এখনো জীবিত এবং সুস্থ আছে। ফলে অসিম ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার এমিলি, আবু সাইদ ও আব্দুল আওয়াল ওই সন্তানটিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভুল চিকিৎসা দিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করে আসছিলেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

Comment using Facebook