ডুমুরিয়ার রঘুনাথপুরের আফিয়া ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

0
172

ডুমুরিয়া সংবাদদাতা

‘ভাই ডাক্তার জাহাঙ্গীরের চাহিদামত ৮০ হাজার টাকা খরচ করেও আমার স্ত্রী তাসলিমাকে বাচাঁতে পারলাম না। অপারেশন থিয়েটারে তার আর্ত চিৎকারে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এরপর অপারেশন থিয়েটার থেকে তাছলিমাকে বের করে এনে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিযে দেয় ডাঃ জাহাঙ্গীর হোসেন’।

কান্না জড়িত কন্ঠে এমনটাই বললেন, ডুমুরিয়া উপজেলার ছয়বাড়িয়া গ্রামের আবুল কালাম গাজী। রোগীর ভুল চিকিৎসার এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে ডুমুরিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে অবস্থিত আফিয়া ক্লিনিক এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তাছলিমা বেগমের স্বজনেরা জানান, গত বুধবার পেটে যন্ত্রনা নিয়ে তাছলিমা বেগম (৩০) কে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।

পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তার পেটে টিউমার রয়েছে বলে জানানো হয়। দ্রুত অপারেশন না করলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে বলে ভর্তি করান ক্লিনিক মালিক কথিত ডাক্তার জাহাঙ্গীর হোসেন। সেখানে কয়েকদিন ভর্তি রেখে রোববার রাতে তাছলিমার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের সময়ে রোগী প্রচন্ড চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। এক পর্যায়ে রোগীকে বাইরে এনে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে সোমবার রাতে মারা যায় তাছলিমা। তাছলিমার স্বামী কালাম ক্ষুদ্র কলা ব্যবসায়ী। ধার দেনা করে ৮০ হাজার টাকা তিনি স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ব্যয় করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ক্লিনিক মালিক রোগীর স্বজনদের নানা রকম ভয়ভীতি দেয়।

ক্লিনিক মালিক ও পরিচালক ডাঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (যদিও তিনি এমবিবিএস নন) জানান, রোগীর সঠিক চিকিৎসা হয়েছে। অপারেশনের পর রোগীর শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে আইসিইউতে রাখার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু আমার ক্লিনিকে আইসিইউ না থাকায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, আমার ক্লিনিকে এনেসথিয়া সার্জন হিসেবে রয়েছেন ডাঃ ফরহাদ হোসেন। সাইনবোর্ডে ফরহাদ হোসেন হাড় ভাঙ্গা ও পঙ্গু বিশেষজ্ঞ লেখা রয়েছে।

এ বিষযে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পবিবার পরিকল্পনা (ইউএইচও) ডাঃ সুফিয়ান রোস্তম জানান, আফিয়া ক্লিনিক রেজিষ্ট্রেশনের জন্য সিভিল সার্জন অফিসে আবেদন করলে রেজিষ্ট্রেশন দেয়ার বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Comment using Facebook