বাগেরহাট সংবাদদাতা
বাগেরহাটের শরণখোলায় স্বামীর জেলে কার্ডের চাল নিতে গিয়ে হাসিনা বেগম (৪৫) নামে এক নারী ইউপি সদস্যদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় ওই নারীর পাল্টা আক্রমনে আহত হয়েছেন গিয়াস উদ্দিন (৭০) নামে এক ইউপি সদস্য। তার ডান হাত ভেঙে গেছে। বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ৯টায় উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে।
আহত ওই নারী সোনাতলা গ্রামের জেলে নাসির হাওলাদারের স্ত্রী। তাকে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি কার হয়েছে। আহত ইউপি সদস্যকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী হাসিনা বেগম জানান, ১ নম্বর সোনাতলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হাওলাদার মঙ্গলবার বিকেলে এলাকায় জেলে কার্ডের চাল বিতরণের সিলিপ বিতরণ করেছেন। সবাইকে দিলেও তার স্বামীর কার্ডের সিলিপ দেননি। বুধবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ইউপি সদস্যের কাছে কার্ডের সিলিপ চাইলে পরে দেওয়া হবে বলে জানান। স্বামীর অসুস্থতার কথা জানিয়ে থাকায় বারবার অনুরোধ করার হলেও ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে তাকে চুল ধরে বের করে দেন। এসময় ইউপি সদস্য গিয়াসউদ্দিন, জাকির হোসেন ও নাছির চৌকিদার মিলে তাকে মারধর করেন।
সোনাতলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি পরিষদে কার্ডের সিলিপ লিখতেছিলাম। এসময় ওই নারী এসে তার স্বামীর কার্ডের সিলিপ চান। এবার বরাদ্দ কম আসায় পরবর্তীধাপে তাকে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে পায়ের জুতা খুলে আমার দিকে ছুড়ে মারেন। এসময় পাশে থাকা গিয়াস মেম্বার ছুটে এসে তাকে থামনোর চেষ্টা করেন। এসময় ওই নারী অপর পায়ের জুতা খুলে গিয়াস মেম্বরকে পেটানোর চেষ্টা করলে তার ডান হাতটি ভেঙে যায়। রায়েন্দা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমি কার্ডের সিলিপ অনুযায়ী চাল দিচ্ছিলাম, এসময় শুনি জাহাঙ্গীরের সাথে ওই নারীর কথার কাটাকাটি চলছে। আমি তাদের থামাতে গেলে ওই নারী আমার ওপর আক্রমন করেন। তার জুতার আঘাতে আমার ডান হাত ভেঙে গেছে। সাউথখালী ইউনিয়ন পরিণদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নে মোট ২৬০০ জন জেলে। এর মধ্যে এবার বরাদ্দ এসেছে ১২৩০ জনের। বাকিদের জন্য আগামী মাসে বরাদ্দ পাওয়া যাবে। একারণে অর্ধেক জেলেকে এই বরাদ্দের চাল দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু হাসিনা বেগম তা মানতে নারাজ। অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।