ডুমুরিয়ায় দু’টি খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের দাবী

0
181

ডুমুরিয়া সংবাদদাতা

খুলনার ডুমুরিয়ার আটলিয়া ও মাগুরাঘোনা ইউনিয়ের এলাকাভূক্ত ওড়াবুনিয়া বিলের মধুমারী ও বিষের খাল নামক দু’টি খাল কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধ ভাবে বেঁড়ি বাঁধ ও নেট-পাটা দিয়ে মাছ চাষ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে এলাকার ভূক্তভোগী রবিউল ইসলাম মিঠুসহ ৬৬ জন কৃষিজীবি মানুষ প্রতিকার চেয়ে রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে যেয়ে জানা গেছে, উপজেলার আটলিয়া ও মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তি ওড়াবুনিয়া বিলে এলাকার সাধারণ মানুষের অন্তত দুই হাজার একর ফসলী জমি রয়েছে। ওই জমিতে তারা ধান ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

বিলের ভিতর দিয়ে বর্ষা মৌসুমে এলাকার পানি নিষ্কাশন ও শুষ্ক মৌসুমে ধান ও মাছ চাষাবাদের জন্যে মধুমারী ও বিষের খাল নামক দু’টি খাল রয়েছে। কিন্ত বিগত কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ চুকনগর গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি আলতাপ হোসেন শেখ, নরনিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, মালতিয়া গ্রামের জব্বার মল্লিক ও আব্দুল হালিম মোড়ল, মাগুরাঘোনা গ্রামের মোক্তার শেখ,জামাল শেখ ও নুর আলী শেখসহ আরো কতিপয় ব্যক্তি তাদের জমির পাশ দিয়ে প্রবাহিত খাল দু’টির বিভিন্ন অংশে অবৈধ ভাবে বেড়িবাঁধ, পাটা দিয়ে ঘের-ভেঁড়ি তৈরী করে মাছ চাষ করছেন। ওই খাল দিয়ে পানি সরবরাহ বাঁধাগ্রস্হ হওয়ার ফলে বর্ষা মৌসুমে বিলের মৎস্য ঘের তলিয়ে ভেসে যাওয়া এবং ধান চাষ ব্যহত হচ্ছে। অপর দিকে মাগুরাঘোনা ইউনিয়ের বেতাগ্রাম, ঘোষড়া, কাঞ্চনপুর, হোগলাডাঙ্গা, মাগুরাঘোনা গ্রাম সহ পার্শ্ববর্তি তালা উপজেলার কয়েকটি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের এক মাত্র পথ খাল দু’টিতে বাঁধ দেয়ায় পানি বের হতে না পারায় এলাকা প্লাবিত হয়ে আসছে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে বিলের হাজার হাজার কৃষক তাদের উৎপাদিত ধান ও মাছ চাষাবাদের জন্যে পানি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে ফসল উৎপাদন মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে ভূক্তভোগী জানতে চাইলে ভূক্তভোগী মাগুরাঘোনা এলাকার রবিউল ইসলাম মিঠু, বিমল চন্দ্র দাস, মোঃ আসাদুজ্জামান সহ আরো অনেকে জানান, বিগত ২০০৩ সালের দিকে এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনীর দাপট দেখিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি সরকারি নদী-খাল জবর-দখল করে অবৈধ ভাবে ঘের ভেঁড়ি তৈরী করে ভোগ-দখল করে আসছে। ২০১৮ সালের দিকে অতি বর্ষণে এলাকা প্লাবিত হওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশনের জন্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য নায়ারণ চন্দ্র চন্দ এমপি’র নির্দেশনায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দু’টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও এলাকার সাধারণ মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ অপসারণ করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাা করেন। বেশি দিন যেতে না যেতে সেই সব অবৈধ দখলদার আবারও খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘের মালিক আলতাপ শেখ বলেন, বিলে আমার অনেক জমি। তাই যাতে খাল দিয়ে লবন পানি উঠে ধানের ক্ষতি করতে না পারে তার জন্যে আমি খালে বাঁধ দিয়েছি। চার বছর আগে একবার এলাকার লোকজন বাঁধ কেঁটে দেয়ার কারনে সমস্ত বিলে লবনপানি ঢুকে ধানের ক্ষতি হয়েছিলো।

বিষয়টি নিয়ে আমি এমপি স্যারকে জানালে তিনি খাল আবারও বেঁধে দিতে বলেন। সরকারি খালের জমি বৈধ কোন বন্দোবস্ত নিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কোন বন্দোবস্ত নেয়া নেই। আমার পূর্ব পুরুষরা এখানে ঘের ভেঁড়ি দিয়ে আসছিলো আমিও সেই ধারাবাহিকতায় দখলে আছি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবদুল ওয়াদুদ বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে এসিল্যান্ডকে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে।

Comment using Facebook