নওয়াপাড়া ডেস্ক
মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) হাসপাতালে ঠাঁই নেই। বর্তমানে গড়ে প্রতি মিনিটে একজন করে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী এ হাসপাতালে আসছেন।
অসংখ্য রোগীর ভিড় সামাল দিতে হাসপাতালটির চিকিৎসক ও নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ডায়রিয়ার সুচিকিৎসার জন্য স্বনামধন্য রাজধানীর এ হাসপাতালে সম্প্রতি একদিনে সর্বোচ্চ প্রায় ১৪০০ রোগী ভর্তির রেকর্ড হয়েছে। এর আগে ২০০৭ সালে ১ হাজার রোগী ভর্তির রেকর্ড ছিল। চলতি বছরের মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরু থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এ হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দৈনিক গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ জন ছিল।
কিন্তু এপ্রিল মাসে দৈনিক রোগীর সংখ্যা ১২০০ থেকে ১৪০০ ছুঁই ছুঁই করছে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৬০ শতাংশই ত্রিশোর্ধ্ব থেকে চল্লিশ বছর বয়সী নারী-পুরুষ। তারা জানান, গত এক মাসের ব্যবধানে আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের রেজিস্টারে ২৯ জনের মৃত্যু লিপিবদ্ধ হয়। তাদের মধ্যে ২৫ জনের মৃত্যুই বাসা থেকে হাসপাতালে আনার পথে হয়। হাসপাতালে আনার পর তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়। ভর্তি হওয়া চারজনের মৃত্যু হয়। পানিবাহিত ডায়রিয়া রোগটি কী কী কারণে হয় সে সম্পর্কে সরকারিভাবে প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি আক্রান্ত এলাকাগুলোতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, পানিবাহিত এ রোগের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে জনসচেতনতা জরুরি। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কার্যকর প্রচার প্রচারণা ও এলাকা বিশেষে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, রেডিও, টেলিভিশন ও পত্রপত্রিকায় রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা মূলক প্রচারণা চালানো হয়। কিন্তু দেখা গেছে আক্রান্ত রোগীদের অনেকেই এ তিনটি মাধ্যমের কোনোটিই সেভাবে দেখেন না। ওয়াসার পানি ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় সে পানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের জন্য পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা প্রয়োজন।
বর্তমানে রাজধানীতে মাত্র পাঁচটি এলাকায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। এসব এলাকায় বিনামূল্যে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করলে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর চাপ কমে যাবে বলে ওই কর্মকর্তা অভিমত ব্যক্ত করেন।