ডুমুরিয়া সংবাদদাতা
ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে পাউবোর জমি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান আবারো শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড’র যৌথ উদ্যোগে এ উচ্ছেদ অভিযান চলছে। গতকাল রোববার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তৃতীয় ধাপের এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।
এদিকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ডুমুরিয়া সদরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের আশ-পাশ এবং চৌরঙ্গী মোড় হতে শংঙ্খ মহল সিনেমা হয়ে আরো পশ্চিম দিক পর্যন্ত এবং ডুমুরিয়া বাজারের বিভিন্ন স্হানে পাউবোর অধিগ্রহনকৃত জমিতে শত শত অবৈধ স্থাপনা থাকলেও সেগুলো উচ্ছেদ না করে বার বার একটি নির্দিষ্ট স্থানে অভিযান পরিচালনা করায় এ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
এ ছাড়া পাউবোর অধিগ্রহনকৃত জমি নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবির বুলুসহ আরো কয়েক জন ব্যক্তির মামলা আদালতে চলমান থাকা সত্বেও তা উপেক্ষা করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবির বুলু জানান, তিনি পাউবোর অধিগ্রহনকৃত জমির মধ্যে হতে ১ একর ৪ শতক জমি তিনি যথাযথ নিয়ম মেনে অবমুক্তির জন্যে আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট পাউবো কর্তৃপক্ষের সুপারিশে জেলা প্রশাসক কার্যালয় হতে ৯ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে অনুমোদন দিয়ে ৩১ ডিসেম্বর তারিখে তাকে জমির দখল বুঝে দেয়া হয়। সেই থেকে তিনি জমিতে দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমান আরএস জরিপেও এই জমি তার নামে রেকর্ড হয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি আরো জানান, গত বছর উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলে তিনিসহ আরো কয়েক জন জমি অবমুক্তকারি বৈধ দখলদার বাদী হয়ে পাউবো কর্তৃপক্ষ কে বিবাদী করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ জেলা জজ আদালতে চলমান মামলাটি আগামী মাসের ১১ মে তারিখে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনার শুনানীর জন্যে দিন ধার্য্য থাকলেও তার আগেই পুনরায় তার স্থাপনা ভাঙ্গচুর করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে পাউবো খুলনা পওর শাখা-১ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ডুমুরিয়া সদরের শালতা ও ভদ্রা নদীর পাশসহ অন্যান স্হানে পাউবোর অধিগ্রহনকৃত ৬ একর ৪৫ শতাংশ জমিতে প্রায় তিন শতাধিক ব্যক্তি পাকা, আধাঁপাকা ইমারত নির্মাণ সহ অবৈধ ভাবে বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে চালিয়ে আসছে। এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে ইতি পূর্বে আরও দু’বার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। কিন্তু দখলদারেরা কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার তা দখলে নিয়ে নেয়। সম্প্রতি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে পাউবোর সম্পত্তি উদ্ধার ও দখলে নিতে এ অভিযান শুরু করা হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মামুনুর রশীদ এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা পওর শাখা-১ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হাসনাতুজ্জামান।
অভিযানে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) মোঃ ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে সাদা ও পোশাক ধারী প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশের একটি টিম সহযোগীতা করেন।