পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা
পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তদারকি ও কৃষকের নিবিড় পরিচর্যার ফলে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ কম থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারের মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা জানিয়েছে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা উফশি জাতের ধান কাটা শুরু করেছে। বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী চলতি মৌসুমে অত্র উপজেলায় ৪ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিছু কিছু এলাকায় এ বছর লবণ পানি উত্তোলন বন্ধ থাকায় বোরো আবাদ বৃদ্ধি পায়। ফলে লক্ষামাত্রার স্থলে ৫ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়। যার মধ্যে ২ হাজার ৪১২ হেক্টর ব্রি ধান-২৮, ১ হাজার ১৩৪ হেক্টর ব্রি ধান-৬৭, ১৯০ হেক্টর ব্রি ধান-৫৮, ৭৫ হেক্টর ব্রি ধান-৫০, ২৩ হেক্টর ব্রি ধান-৮৮, ৩০ হেক্টর ব্রি ধান-৭৪, ৫০ হেক্টর ব্রি ধান-৮১, ২১ হেক্টর ব্রি ধান-৭৭, ১২ হেক্টর ব্রি ধান-৭৮, ১০ হেক্টর ব্রি ধান-৯৯, ৩ হেক্টর ব্রি ধান-১০০, ৩০ হেক্টর ব্রি ধান-৬৩, ১৫ হেক্টর ব্রি ধান-৯২, ১৫ হেক্টর বিনাধান-১০, ১৫ হেক্টর বিনাধান-১৪, ১৫ হেক্টর বিনাধান-২৪। উন্নত জাতগুলোর মধ্যে হাইব্রিড হিরা ১৪১ হেক্টর, শক্তি-২-৮৬ হেক্টর, তেজগোল্ড ১৪৩ হেক্টর, সিনজেন্টা-১২০৩- ২২২ হেক্টর, এসএল ৮ এইচ ২৯৫ হেক্টর, এম এস-১- ৩২৫ হেক্টর ও এসিআই-১- ৩৬০ হেক্টর। ইতোমধ্যে উফশি জাতের ধান কৃষকরা কাটতে শুরু করেছে। হিতামপুর গ্রামের কৃষক শফি মোড়ল জানান, আমি ব্রি ধান ৬৭ ও ২৮ কর্তন করেছি। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, কৃষি বিভাগের সার্বিক তদারকি ও কৃষকরা সতর্ক থাকার ফলে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ কম ছিল। এ জন্য বাম্পার ফলন হয়েছে।
ইতোমধ্যে কিছু কিছু কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন ৫ থেকে ৬ মেট্রিকটন ছাড়িয়ে গেছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। তবে ২৮ এর পরিবর্তে ৬৭, ৮১, ৮৮, ৯২, ৯৯ ও ১০০ সহ অন্যান্য জাতের ধান আবাদে কৃষকদের এগিয়ে আসা উচিৎ।
এছাড়া অনেক এলাকায় এখনো লবণ পানি উত্তোলন বন্ধ হয়নি। এ সব এলাকার লবণ পানি বন্ধ করতে পারলে বোরো আবাদ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে। এতে একদিকে এলাকার খাদ্য চাহিদা পূরণ করে বাড়তি খাদ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ এবং বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।