এইচ, এম, দুলাল মোংলা
মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে চলমান ড্রেজিং কার্যক্রম ব্যাহত করতে একটি চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। চক্রটি বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে বন্দরের চলমান উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্থ করছে। কিছু সুবিধাবাদী ব্যক্তি এসব করছেন উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার। রবিবার দুপুর ১২টায় বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার আরো বলেন, বন্দরে সাড়ে ৯ মিটার গভীরতা সম্পন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ প্রবেশে জরুরীভাবে হাড়বাড়ীয়া থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত ২৩ দশমিক চার মিটার ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু হয় ২০২১ সালের ১৩ মার্চ।
ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার জন্য মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনিরঘোল হতে চাঁদপাই ইউনিয়নের কাইনমারী পর্যন্ত বন্দর কর্তৃপক্ষ দুই বছরের জন্য ৭শ একর জমি হুকুম দখল করে। ওই জমির মালিককে ক্ষতিপূরণসহ জমি ব্যবহার শেষে তাদের জমি ফেরৎ দেওয়া হবে। এছাড়া সুন্দরবন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হওয়ায় ড্রেজিংয়ের মাটি কোন অবস্থাতাতেই সুন্দরবনের মধ্যে ফেলা যাবেনা। তাই বৃহত্তর স্বার্থে সুন্দরবনের বাহিরে পশুর নদীর তীরবর্তী এলাকার জমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলতে হচ্ছে। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল এই জমিতে বালু ফেলতে বাঁধা সৃষ্টি করে কথিত আন্দোলনের চেষ্টা করছে। মহলটি বন্দর কর্তৃপক্ষের লীজ নেওয়া ওই জমিটি কৃষি জমি উল্লেখ করে আন্দোলন গরম করছে। এসব সুবিধাবাধী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান বন্দরের কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা কমডোর আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, মোংলা বন্দরের হাড়বাড়ীয়া এ্যাংকোরেজ থেকে জেটি পর্যন্ত ২৩ দশমিক চার মিটার নৌ পথের গভীরতা কম থাকায় বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। এ সমস্যা ছিল বন্দর চ্যানেলের প্রবেশ মুখ বা আউটার বারেও। তবে সম্প্রতি ড্রেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে এনে কর্তৃপক্ষ আউটার বারের সমস্যার সমাধান করেছে। এখন অনায়াসেই সাড়ে ৯ মিটারের দেশী- বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ পণ্য নিয়ে বন্দরের হাড়বাড়ীয়া পর্যন্ত নোঙ্গর করছে।
কিন্তু সমস্যা ইনার বারের (হাড়বাড়ীয়া থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত) ২৩ দশমিক চার মিটার নিয়ে। এটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ ড্রেজিং শুরু করেছে। গত ২০২১ সালের ১৩ মার্চ থেকে থেকে ৭’শ ৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কার্যক্রম শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। রবিবার দুপুরে মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়ন ও গুরুত্ব সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন, সচিব ও হারবার মাষ্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দিন, প্রধান অর্থ ও হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান ও সিভিল ও হাইড্রলিক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শওকত আলী।