খুলনা ব্যুরো
খুলনার বাজারে ভোজ্যতেল নিয়ে তেলেসমাতি অব্যাহত রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার অনেক আগেই সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেই দামে তেল বিক্রি করছেন না খুলনার ব্যবসায়ীরা। উল্টো আরও একদফা দাম বাড়িয়েছেন। এবার মিল মালিকদের বিরুদ্ধে উঠেছে কারসাজির অভিযোগ। গত ২০ মার্চ সরকার ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেসময় সরকার এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৬০ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৭৬০ টাকা ও প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। শনিবার (৯ এপ্রিল) খুলনা মহানগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৬৫ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৭৯০ টাকা এবং প্রতি কেজি খোলা তেল ১৭৫ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। নগরীর বড় বাজারের পাইকারি তেল ব্যবসায়ী ও রেজা অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক শাহ আলম সর্দার, কবীর ব্রাদার্সের কবীর হোসেন বলেন, সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। এখনতো তেলের দাম বাড়ার কথা না। তারা বলেন, সরকার ভোক্তা পর্যায়ে ভ্যাট উঠিয়ে নিলে ১৮০ টাকার তেল ১৫৮ টাকায় নেমে আসে।
কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে আবারও একদফা তেলের দাম বেড়েছে। মিল মালিকদের কারসাজিতে এই মূল্যবৃদ্ধি। বর্তমানে প্রতি কেজি সয়াবিন তেল ১৭০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, তেলের দাম খুলনা থেকে নির্ধারণ করা হয় না, ঢাকা থেকে হয়। দাম কমাতে হলে আগে মিল মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে সরকারকে। দাম নির্ধারণ করে বাজার তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে সর্ষের ভেতর ভূত থেকেই যাবে। রূপচাঁদা কোম্পানির খুলনার একজন প্রতিনিধি বলেন, তেলের সরবরাহ এখনো স্বাভাবিক হয়নি। তেল যা আসছে তা চাহিদার তুলনায় একেবারে কম। এক লিটারের বোতল পাওয়া গেলেও পাঁচ লিটারেরটা চাহিদামতো পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা বাজারে তেলের দাম বাড়ার খবর শুনেছি। টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী লিটন, আব্দুল্লাহ, মনি ও আবু বক্কর বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ১৬৫ টাকায় এক লিটার, ৭৯০ টাকায় পাঁচ লিটার ও প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা দরে বিক্রি করছি। পাইকারি বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের কোনো প্রভাব পড়েনি।
খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক জানান, দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার বিষয়টি মনিটরিং চলছে। মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে খুলনায় কারও হাত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে দাম বাড়ার বিষয়টি নিয়ে বেশকিছু অভিযান চালানো হয়েছ, এখনো হবে।