কয়রা (খুলনা) সংবাদদাতা
খুলনার কয়রা উপজেলায় বোরো চাষিদের ধানক্ষেতে বিভিন্ন ধরণের পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
পোকার আক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেও কোন কাজে আসছেনা। আর এতে একপ্রকার দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বোরো চাষিরা। সরজমিনে উপজেলার জদুর বিল,হেতালখালির বিল,আবাদের বিল ও মধ্য মহারাজপুর বিলে দেখা গেছে, ধানের ক্ষেতে ছড়ি থেকে সবেমাত্র ধানের শীষগুলো বের হতে শুরু করেছে।
এরইমধ্যে ওই বের হওয়া ছড়িতে ধানের শীষে সাদা লম্বা লেদা পোকার মতো এক ধরনের পোকা ওই ধানের শীষগুলো ছিদ্র করে ফেলছে। ফলে ওই ছরিতে আর ধান না হয়ে শুকিয়ে সাদা (চিটা) হয়ে যাচ্ছে। ওই পোকার আক্রমণ থেকে কৃষকের কষ্টের বোরো ধান রক্ষায় বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
পোকার আক্রমণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন অধিকাংশ কৃষক। এতে প্রতি বিঘা জমিতে অন্তত্ব পাঁচ থেকে ছয় মণ করে ধান কম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার জদুর বিল এলাকার কৃষক সলেমান সরদার বলেন ,বোরো রোপণের পর ২০ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত কোন পোকা আক্রমণ করেনি। হঠাৎ করে ক্ষেতে ব্যাপকভাবে পোকার আক্রমণ বেড়ে যায়।রক্ষা পেতে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেছি। এরপরও ছড়ায় ধানের শীষ বের হওয়ার পর আবার পোকার আক্রমণ বেড়ে গেছে। পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করে কোনো প্রতিকার মিলছে না। একই এলাকার কৃষক আবুল সরদার ও কামরুল ঢালী বলেন, এ বছর বোরো ধানের বীজ খুবই ভালো চিল।
কিন্তু পোকা সব শেষ করে দিচ্ছে। ধানের শীষ কেটে দিয়েছে। তাই আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না বলেও আশঙ্কা করেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কয়রা উপজেলায় ৪ হাজার ২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। সেখানে এবছর ৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৪ শত ৯০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১ হাজার ৩ শত ৬০ হেক্টর জমিতে উচ্ছফলনশীল ( উফশী ) বীজ আবাদ করা হয়েছে। এদিকে কৃষকদের বোরো আবাদ বৃদ্ধিতে সরকারী ভাবে ১ হাজার ৫ শত কৃষককে বীজ ও সার দিয়ে সহয়তর করা হয়েছে। কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, কয়রা উপজেলার বিভিন্ন বোরো ক্ষেতে পোকার আক্রমণ বেড়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ মাঠ পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। তাছাড়া কৃষক ভাইয়েরা বেশি ফলনের আশায় কৃষি বিভাগের অনুমোদনহীন বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ করে থাকেন। সেই জাতগুলো নতুন ধরনের মাজরা পোকা ও রোগ বালাই বহন করে এবং আক্রান্ত হয়। একই মাঠে বা পাশাপাশি জমিতে সেসব জাতের ধান চাষ করার কারণে পোকা ও রোগ বালাইগুলো অনুমোদিত জাতের ধানেও ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে কৃষক ভাইদের বার বার সুপরামর্শ দেয়া হলেও তারা মানে না। তবে ইতোমধ্যে নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।