সাইফুজ্জামান তাজু, হরিণাকুন্ডু
রমজানের প্রথম দিনেই নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লেগেছে। একদিনের ব্যবধানে অনেকটা লাগামহীন হয়ে পড়েছে ঝিনাইদহের হরিণাকু-ুর বাজার। ফলে নি¤œ আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তরাও নাগাল পাচ্ছেন না নিত্যপণ্যের।
বাজারে গিয়ে টাকার সাথে সামঞ্জস্য না হওয়ায় বাধ্য হয়ে অর্ধেক পণ্য কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাদের। রমজানের প্রথম দিনে উপজেলার দৈনিক সকালের বাজার, কুলবাড়িয়া বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের দিন যে পণ্যের দাম ছিল ৩০-৩৫টাকা। সেই একই পণ্য রোববার বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকা দরে। শষা, বেগুন, ধনেপাতা, লেবু ও কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে গড়ে ৩৫টাকা। স্বাভাবিক রয়েছে আলু, পেঁয়াজ, ছোলা ও চিনির দাম।
বেড়েছে সব ধরণের মাছ ও সবজির দামও। প্রকারভেদে মাছের দাম আগের দিনের তুলনায় কেজিতে ১০-১০০টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। খাইরুল ইসলাম নামে একজন খুচরা বিক্রেতা জানান, শনিবার বেগুন বিক্রি হয়েছে ২০টাকা কেজি দরে। সেই বেগুন আজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০টাকা দরে। আর শষা কেজিতে ২৫টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৫টাকা। ধনেপাতা ৪০টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০টাকা। প্রতি হালি লেবুর দাম ২৫টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫টাকা। কাঁচা মরিচের দাম ৮০টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০০-১১০টাকা। এদিকে ভ্যাট প্রত্যাহারের পরও কমেনি সয়াবিন তেলের দাম। বোতলজাত প্রতি লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে সেই আগের ১৬৮টাকা দরে। খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৭২টাকা দরে। পামওয়লে বিক্রি হচ্ছে ১৫২-১৫৫টাকা দরে।
উপজেলা মোড়ের দৈনিক সকালের বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা ফজলুর রহমান বলেন, রমজান শুরু হয়েছে। তাই একদিনেই লাফিয়ে দিগুণের বেশি হয়েছে দাম। বাজারে আগুন লেগেছে। মালামাল কেনা দায়। তাই চাহিদার অর্ধেক কিনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। বেগুন, শষা, কাঁচা মরিচ, ধনে পাতাসহ প্রায় সব ধরণের পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। নিয়ামত আলী নামে এক স্কুল শিক্ষক বলেন, আমি প্রতিদিন সকালে নিত্যপণ্য কিনি। আগের দিনের চেয়ে আজ পণ্যের দাম দ্বিগুন। দ্রুত মনিটরিং না করলে মানুষ অসহায় হয়ে পড়বে। আবুল হোসেন নামে এক বিক্রেতা বলেন, সকালে মহাজনদের কাজে পণ্য কিনতে গেলে তারা আগের তুলনায় আজ দিগুণ দাম নিয়েছেন।
ফলে আমাদের কিছু করার নেই। তবে এমন অস্বাভাবিক দাম আগে কখনও বাড়েনি বলে স্বীকার করেন এই ব্যবসায়ী। হরিণাকু-ু বাজারের পাইকার ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, মরিচসহ প্রতিটি পণ্যের দামই দ্বিগুন নিচ্ছে আড়তদাররা। এর সাথে রয়েছে পরিবহন ব্যায়। এছাড়া বেগুন, শষাসহ অন্যান্য পণ্যও দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে। তবে সচেতন ক্রেতাদের দাবি, রমজান উপলক্ষে রাতারাতি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা। ফলে লাগামহীন হয়েছে নিত্যপণ্যের দাম। দ্রুত এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে ইউএও (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিম আহম্মেদ বলেন, রোববার উপজেলার সব ব্যবসায়ী সমিতিকে নিয়ে সভা করা হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর রয়েছে প্রশাসন। নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। কেউ নিত্যপণ্যের দাম বেশি নিলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।