হরিণাকুন্ডু (ঝিনাইদহ)
শিঙ্গাপুর প্রবাসী শরিফুল ইসলামের বয়স ৩৮বছর। ২০ বছর বয়সে কলেজ জীবন থেকে তার বিয়ের শুরু। এ পর্যন্ত তার বিয়ের সংখ্যা ছয়। একের পর এক বিয়ে করতে সে নিয়েছে নানারকম প্রতারণার আশ্রয়। সে শহরতলির পার্বতিপুর এলাকার আবু তালেবের ছেলে। তার এসব বিয়ের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি পঞ্চম স্ত্রী দাবি করে শামিমা আরেফিন নামে এক নারী প্রতারণার অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছেন। ঝিনাইদহ সদর থানা এবং পারিবারিক আদালত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এসব মামলা করা হয়েছে। আদালত এসব মামলা আমলে নিয়ে ঝিনাইদহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। অন্য একটি মামলায় তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ আরও একটি মামলার তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। মামলার অভিযোগে ওই নারী জানান, ২০১৮ সালে পাঁচ লাখ টাকার কাবিনে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে তার ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে সে। এক পর্যায়ে তার পরিবারের লোকজন চার লাখ দেয় শরিফুলকে। এই টাকা নিয়ে গোপনে ফের শিঙ্গাপুর চলে যায় সে। সেখানে গিয়ে মোবাইলে আরও পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে চলতি মাসের ১৪মার্চ তার শশুর বাড়ির লোকজন তাকে বাড়িতে এনে টাকার দাবিতে মারধর করে বলে দাবি করেন এই নারী। এক পর্যায়ে তাদের অত্যাচার সইতে না পেরে তিনি বাবার বাড়িতে চলে গেলে লুনা নামে আরও এক নারীকে বিয়ে করে সে।
উপজেলার রিশখালি গ্রামের এক নারীর ভাই ওহিদুল ইসলাম জানান, তার বোনকে তারা শরিফুলের সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের সময় কোনো যৌতুকের দাবি ছিল না। পরে সে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিয়ে তারা তার বোনকে ছাড়িয়ে নেন। ভুক্তভোগী এসব নারীদের অভিযোগ, প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় তার কাজ। ঝিনাইদহ সমতা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে কর্মরত আনজিরা খাতুন নামে এক নারী শরিফুলকে তার স্বামী দাবি করে বলেন, বিদেশ থেকে মোবাইলে তার সাথে পরিচয়ের সূত্রে তারা গোপনে বিয়ে করেন। তাদের বছর বয়সের এক মেয়ে সন্তানও রয়েছে। এখন আর সে কোনো যোগাযোগ রাখে না।
ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মাহাবুবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে আমাদেরকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত। তদন্ত চলছে। দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।