আবুল কালাম আজাদ, ঝিকরগাছা
হয়রানিমূলক মামলার বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় যশোরের ঝিকরগাছার মল্লিকপুর ও সদরের ছোট মেঘলার প্রায় ২০ বিঘা জমির সেচ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ইরি-বোরো ধানের ক্ষেত শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে।
গভীর নলকূপ বসানো নিয়ে দ্বন্দ্বে সেচ মালিক শত্রুতা করে পানি বন্ধ করেছেন বলে অভিযোগ কৃষকদের। ঝিকরগাছার মল্লিকপুর গ্রামের সেচ ব্যবসায়ী সাইফুজ্জামান এসব বোরো ক্ষেতে পানি সরবরাহ করেন।
কিন্তু নানা সময়ে টালবাহানা করায় ভুক্তভোগী কৃষকেরা নলকূপ বসান। এতে সাইফুজ্জামান ক্ষিপ্ত হয়ে আদালতে মামলা করেন। এ ঘটনায় কৃষকরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন।
একপর্যায়ে বাদী চলতি মৌসুমে পানি দেবেন বলে শুরুতে জানালেও এখন দিচ্ছেন না। সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই ২০ বিঘা ক্ষেতের মাটি শুকিয়ে গাছ হলুদ হয়ে গেছে। দু’এক দিনের মধ্যে এসব খেতে সেচ না দিলে ধান গাছ সব মারা যাবে। কৃষক খাদিজা খাতুন বলেন, নলকূপের মালিক সাইফুজ্জামানের করা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করায় পানি দিবেন না বলে জানিয়েছেন। এক মাস আগে লাগানো ধান গাছে আর ক’দিন বাদে শীষ বেরুবে। এখন যদি পানির অভাব হয় তাহলে ধান হবে না।
পানির অভাবে আব্দুল কুদ্দুসের এক বিঘা জমির বোরো ক্ষেত হলুদ হয়ে গেছে। এতে ধান হওয়ার আর সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, এক বিঘা ধান চাষে মোট খরচের অর্ধেক করা শেষ হয়ে গেছে। এখন যদি এ ধান না হয় তাহলে আমার যে ক্ষতি হবে, তা সহ্য করার মতো সামর্থ আমার নেই।
মাঠে আরো কথা হয়, কৃষক সাইদুল ইসলাম, হযরত আলী (সাবেক শিক্ষক), হাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েজনের সাথে।নলকূপের মালিক সাইফুজ্জামান তাঁদেরকে জানিয়েছেন পানি দেব আমার ইচ্ছামতো, আরো টাকা বেশি লাগবে পানি নিতে হলে। ছোট মেঘলা গ্রামের আব্দুর রহিম ভুট্টো বলেন, এ মাঠের শতাধিক বিঘা জমিতে বোরোধান চাষের জন্য আমরা ২০১৭ সালে একটি গভীর নলকূপ বসানোর আবেদন করি।
উপজেলা সেচ কমিটি যাচাই-বাছাই করে ২০১৯ সালে লাইসেন্স প্রদান করে। এ নিয়ে আরেক গভীর নলকূপের মালিক ঝিকরগাছার মল্লিকপুর গ্রামের সাইফুজ্জামান মামলা করেন।
ফলে আমাদের নলকূপের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায় এবং সেচ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। অথচ তার নলকূপটি রয়েছে দুই হাজার ফুট দূরে ও নিচু জায়গায়। কৃষক ভুট্টো আরও বলেন, প্রচলিত সেচ আইনে বলা হয়েছে, একটি গভীর নলকূপ থেকে অপর নলকূপের দূরত্ব হবে এক হাজার ৯৪১ ফুট। তারপরও সাইফুজ্জামান ওই বছরেই ১৯৮৬-৮৭ সালের সেচ আইন উল্লেখ করে একটি ষড়যন্ত্র মামলা করে আমাদের লাইসেন্সটি স্থগিত করে দেন। সেই থেকে মাঠটিতে বোরোধান চাষ করতে পারছেন না কৃষকেরা। এ বিষয়ে সাইফুজ্জামানের ০১৭৮৭৪৫৮০০৯ মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।