হারুন অর রশীদ, মণিরামপুর থেকে
মণিরামপুরের ঋষী পল্লীতে ধর্ষণ চেষ্টার বিচার না পেয়ে পূর্ণিমা (৩৭) নামের এক গৃহবধূ ক্ষোভে-দুঃখে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল সোমবার উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ঋষী পল্লিতে এ আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে। এর আগে শনিবার রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় স্থানীয় মিজানুর রহমান ওরফে মির্জা ফকির।
এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বজনরা রোববার থানায় অভিযোগ করতে আসলে মিমাংসার কথা বলে হুমকি দিয়ে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হয়। এ ঘটনায় সোমবার রাত ১০টার দিকে ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম আটক হয়েছে বলে জানাগেছে। গৃহবধূর স্বামী সঞ্জিত দাস জানান, শনিবার রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে স্থানীয় মনোহরপুর গ্রামের কফেল ফকিরে ছেলে মিজানুর রহামান ওরফে মির্জা ফকির তার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
তিনি বাড়িতে এসে শোনার পর স্ত্রীকে নিয়ে রোববার থানায় অভিযোগ করতে যান। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম ফকির, ইউপি সদস্য মোস্তফা, কালীপদ মন্ডলসহ কয়েকজন তাদেরকে বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য করেন। রোববার বিকেলে মনোহরপুর গ্রামের রহমান সরদারের ছেলে আবুল দপ্তরি, এজহার সরদারের ছেলে আসাদুজ্জামান নওশের, তাগের ফকিরের ছেলে স্থানীয় মেম্বর সিরাজুল ইসলাম, মিজানুর রহমানের ছেলে আল আমিন, ইউপি সদস্য মোস্তফা ও আকবর আলীর ছেলে ইলিয়াজ হোসেনের উপস্থিতিতে শালিসী বৈঠক বসে। শালিসী সভায় অভিযুক্ত মির্জা ফকির উপস্থিত না হওয়ায় ওই শালিসী সভা প্রত্যাখান করেন নিহত গৃহবধূ পূর্ণিমাসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা। এরপর শালিসী সভার আয়োজনকারিরা পূর্নিমা ও তার স্বামীকে হুমকি-ধামকি দেয়। এক পর্যায় বিচার না পেয়ে ক্ষোভে-দুঃখে সোমবার বিকেলে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন গৃহবধূ পূর্ণিমা। জানতে চাইলে মেম্বর মোস্তফা জানান, সব কিছু মিটমাট করার পরও কেন এমন হলো তা তিনি বলতে পারছেন না।
স্থানীয় নেহালপুর ফাড়ির ইনচার্জ আতিকুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মণিরামপুর থানার ওসি নূর-ই আলম সিদ্দিকী জানান, এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে, তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।