বটিয়াঘাটার ট্রাস্ট সি ফুড কোম্পানির বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ

0
201

বটিয়াঘাটা সংবাদদাতা

বটিয়াঘাটা উপজেলার ভান্ডারকোট ইউনিয়নবাসি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এক মাছ কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। খুলনা স্বাস্থ্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই চলছে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য।

সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এই অবৈধ মাছ কোম্পানি তাদের ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসি উক্ত মাছ কোম্পানির বিরুদ্ধে বটিয়াঘাটা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়। তারা তাদের অভিযোগে উল্লেখ করেন, ভান্ডারকোট এলাকায় ট্রাস্ট সি ফুড কোম্পানির যাবতীয় মাছের বৃষ্টাংশ, দূষিত পানি খোলা খাল বিলে ফেলা হচ্ছে। পানি পচে হচ্ছে প্রচন্ড দুর্গন্ধ। রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে উক্ত খাল থেকে। এলাকায় স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে স্থানীয়রা।

বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা। ভান্ডারকোট ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওবায়দুল্লাহ ওবাইদুল বলেন, মাছ কোম্পানির ময়লা বৃষ্ট নদীতে না ফেলে, ফেলছে খালে। ফলে খালের পাশে থাকা প্রতিবেশীরা বসবাস করতে পারছে না। মাছ কোম্পানিকে বহুবার বলার পরেও তারা কোনো কর্ণপাত করছে না। তাই তিনিও বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গ্রামবাসী লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে উক্ত ট্রাস্ট সি ফুড কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থার জন্য জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন কর্তৃপক্ষের নিকট। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামবাসী অসহায় হয়ে পড়েছে এই মাছ কোম্পানির কারণে।

স্থানীয় মুসলিমা, নাছিমা, খাদিজা, লীজা, সুমিয়াসহ আরো অনেকে বলেন, মাছ কোম্পানির এই ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিন খাল দিয়ে সরানো হয়। মাছের ময়লা পানীর দুর্গন্ধের কারণে আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত পরিবারে কেউ না কেউ অসুস্থ হচ্ছে। মাঝে মধ্যে আমাদের মনে হয়,আমরা যেন এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাই। ডায়রিয়া, বমি, পাতলা পায়খানা, প্রায় সময় লেগে থাকে আমাদের। বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে আমরা রয়েছি খুবই বিপদে। নানাবিধ রোগে ভুগতে হচ্ছে আমাদেরকে। এ বিষয়ে মেম্বার চেয়ারম্যানকে বলে কোন কাজ হয়নি। এমনকি বিভিন্ন মিডিয়াকর্মী, টেলিভিশন সাংবাদিক এখানে এসে ছবি তুলে ঘুরে গেছে।

কখনো কোন পত্রিকায় সংবাদ আসতে দেখিনি। আমাদেরকে এই মাছ কোম্পানির কথিত কিছু সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকির ভয় প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতে হয়। ট্রাস্ট সি ফুড কোম্পানির ডি জি এম আলমগীর হোসেন বলেন, কোম্পানির ব্যবসা করতে আমাদের কোন পরিবেশ, মৎস্য অধিদপ্তরের অনুমোদন লাগে না। তাদের মৌখিক অনুমতি নিয়েই আমরা কোম্পানির কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছি। বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মমিনুর রহমান বলেন, এলাকাবাসির অভিযোগটি আমলে নিয়ে বটিয়াঘাটা ভূমি কমিশনার মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকীককে জরুরী ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

তিনি এ বিষয়ে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খুলনা জেলা মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বিপুল কুমার বসাক বলেন, কোন অবস্থায় মাছ কোম্পানি তাদের ময়লা আবর্জনা খালবিলে ফেলতে পারবে না। মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কিছু করা যাবেনা। তারা যদি এভাবে খোলা পরিবেশে ময়লা আবর্জনা ফেলে তাহলে আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর এলাকাবাসি লিখিত অভিযোগ দিতে হবে। তখন আমরা তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Comment using Facebook