যশোর অফিস
মহান মুক্তিযুদ্ধে যশোরের শহরে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে নিহত দুইজন সরকারি কর্মকর্তার ‘শহিদ’ স্বীকৃতি মেলেনি ৫০ বছরেও। ফলে সরকারিভাবে কবরটি সংরক্ষণের উদ্যোগও নেয়া হয়নি। শহরের লোন অফিস পাড়ার ‘লাহারাজ কাচারি বাড়ি’ নামক সরকারি কোয়ার্টারে শহিদ হন।
পাশেই তাদের সমাহিত করা হয়। অযত্ন অবহেলা কবরের চিহ্নটুকু এখনো আছে। শহিদ স্বীকৃতি ও সরকারিভাবে কবর সংরক্ষণের জন্য তাদের সন্তানরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি দপ্তরে ঘুরছেন। কিন্তু আজও তাদের সেই দাবি পূরণ হয়নি। জানা যায়, যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায় তৎকালীন ‘লাহারাজ কাচারী বাড়ি’ নামক সরকারি বাসভবনে বসবাসরত অবস্থায় ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হন আকোয়ার্ড স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা (বর্তমানে ভুমি মন্ত্রণালয়) এবিএম মোসলেহ উদ্দীন ও কানুনগো আব্দুল জব্বার।
শহিদের স্বীকৃতি ও সরকারিভাবে কবর সংরক্ষণের দাবিতে ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ঘুরছেন দুই শহিদের সন্তানরা। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে শহিদ এবিএম মোসলেহ উদ্দীন ও আব্দুল জব্বারের সন্তানরা তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দুই শহিদের স্বীকৃতি ও সরকারিভাবে কবর সংরক্ষণের দাবি জানান। এরপর ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর যশোরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ওই দুই শহিদের কবর সংরক্ষণের অনুমতি চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠান। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী প্রধান হারুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে জেলা প্রশাসককে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে শহিদ ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ওই দুইজন শহিদের নাম অর্ন্তভুক্ত নেই। ওই দুইজন সরকারি কর্মকর্তার কবর সংরক্ষণের জন্য স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।’ এরপর আর ওই শহিদদের কবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখবো কোন প্রক্রিয়ায় কবর সংরক্ষণ ও সম্মান জানানো যায়।