যশোরের শিল্পনগরী নওয়াপাড়ায় এক যুবকের নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হলেও সেই ভিকটিম যুবক ফেসবুক লাইভে এসে নোয়াপাড়া গ্রুপকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
এমনকি, বিভিন্ন মহল থেকে তাকে মিথ্যা বক্তব্য শিখিয়ে ক্যামেরার সামনে বলানো এবং উস্কানি দিয়ে থানায় মামলা করতে চাপ সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ ওই যুবকের। এতে নিজেই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি ওই যুবকের।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই যুবকের ভিডিওতে ও লাইভে বলতে শোনা যায়, ‘কিছু লোকজন আমাকে নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল করছেন, কেউ কেউ জোর করে বক্তব্য নিচ্ছেন আবার কেউ থানায় মামলা করতে উৎসাহ দিচ্ছেন-চাপ দিচ্ছেন। আসলে ভাই আমাকে নির্যাতনের ভিডিও যদি করেই থাকেন তাহলে দুই বছর পরে এসে কেন ভাইরাল করছেন? অন্যায় আমি করেছি, তার জন্য শাস্তি পেয়েছি, মামলাও চলছে!
তারপরও পুরাতন সবকিছু ভুলে আমি অন্য একটা চাকরি করে ভালোই চলছি। হঠাৎ করে আমার পেছনে কেন লাগলেন? আমাকে দিয়ে কেন জজ মিয়া নাটক বানাচ্ছেন?
ভাইয়েরা দয়া করে আমাকে নিয়ে খেলবেন না। আমি ওই ঘটনায় নিজেই অনুতপ্ত। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া অপর এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ভিকটিম ওই যুবক বলছেন দুই বছর আগের ওই ভিডিওটি ভাইরালের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানতেন না, তবে কয়েকজন তাকে বিষয়টি জানিয়ে ভিডিও বক্তব্য নিয়েছেন। এমনকি, স্থানীয় কয়েকজন তাকে চাপ সৃষ্টি করে ঘটনার বর্ণনার পরিবর্তন করে তাদের শেখানো বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছেন। ভিকটিম যুবক ওবায়দুল্লাহ এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়া ওই যুবক নোয়াপাড়া গ্রুপের স্কেলম্যান (পরিমাপ নির্ণয়ের ওয়েব্রিজ) হিসেবে ফরিদপুর সিএন্ডবি ঘাটে চাকরি করতেন।
২০২০ সালের ১ লা মার্চ স্কেলে পরিমাপ কম দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের গম চুরির ঘটনায় ধরা পড়লে উপস্থিত উৎসুক কয়েকজনে তাকে মারপিট করেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করে। ওই মামলায় আড়াই মাস কারাভোগ করে তিনি জামিনে আছেন। পরে অন্য একটি কোম্পানীতে চাকরি নিয়েছেন তিনি। নোয়াপাড়া গ্রুপের হেড অব মার্কেটিং এন্ড সেলস্ মিজানুর রহমান জনি বলেন, ‘গত কয়েকমাস ধরে স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ চক্র কোম্পানীর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেন। এমনকি, ওই চক্রটি কয়েকমাস আগে প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। এমনকি, দুইমাসে ওই চক্রটি জাল কাগজের মাধ্যমে দুই ট্রাক বিএডিসি’র টিএসপি সার গায়েবের ঘটনায় ওই চক্রটি জড়িত বলে ধারণা করছি। উভয় ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ করেছি।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে. এম শামীম বলেন, ‘ভাইরাল ভিডিও দেখে ভিকটিম ওই যুবককে থানায় ডেকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি এবং অভিযোগ করলে মামলা নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করি। তবে, ওই যুবক কোনভাবেই মামলা করতে রাজি হয়নি। ফলে এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করণীয় দেখছি না। ভিডিও ভাইরাল করে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
(মিজানুর রহমান জনি)
হেড অব মার্কেটিং এন্ড সেলস্
নোয়াপাড়া গ্রুপ, অভয়নগর, যশোর।