খুলনা ব্যুরো
ডুমুরিয়া উপজেলার ২নং রঘুনাথপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মনোজিৎ বালার বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের না জানিয়ে প্রথম বরাদ্দের ৬টি প্রকল্প গঠন করে নিজেই সেজেছেন প্রকল্প চেয়ারম্যান।
এতে ফুঁসে উঠেছেন পরিষদের ১২জনই সদস্য। বুধবার (১৬ জানুয়ারি) তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে আইন না জানার কারণে এ অনিয়মের কথা তিনি সাংবাদিকদের সামনে স্বীকার করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা যায়; ডুমুরিয়ার ২নং রঘুনাথপুর ইউনিয়নে সাধারণ গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণা বেক্ষণ (টিআর নগদ অর্থ) কর্মসূচির (২য় পর্যায়) আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ত্রাণ শাখা থেকে বরাদ্ধ আসে। কিন্তু ডুমুরিয়া উপজেলার ২নং রঘুনাথপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মনোজিৎ কুমার বালা সদস্যদের না জানিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি একটি ভুয়া মিটিং দেখিয়ে ৬টি প্রকল্প কমিটি গঠন করেন। ৯ ফেব্রুয়ারি এ কমিটি উপজেলা ত্রাণ শাখায় জমা দেন।
চেয়ারম্যান নিজে ৬টি প্রকল্পেরই চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। গজেন্দ্রপুর শ্রী শ্রী পোলাদ সেবা আশ্রম মন্দির সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা, রূপরামপুর উত্তর পাড়া শ্রী শ্রী হরি গুরু চাঁদ মন্দির সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা, কৃষ্ণনগর উত্তর পাড়া বৈরাগী বাড়ি সার্বজনীন পূজা মন্দির সংস্কার বাবদ ৮৫ হাজার টাকা, কৃষ্ণনগর মহামায়া সার্বজনীন পূজা মন্দির সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা, রূপরামপুর পশ্চিম পার সার্বজনীন পূজা মন্দির সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা এবং গজেন্দ্রপুর দূর্গা মন্দির সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্প তালিকা করেছেন।
বিষয়টি অবগত হয়ে ইউনিয়নের ১২ জন সদস্য গত বুধবার (১৬ জানুয়ারি) ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
ইউপি সদস্য অমিতেষ বালা, তুষার মল্লিক, মোজাহিদুল হক, ইকবাল মাসুদ আলামিন বিশ্বাসসহ উপস্থিত মেম্বররা বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে নতুন শপথ নিয়েই চেয়ারম্যান যেভাবে অনিয়ম স্বেচ্ছারিতা শুরু করেছেন তাতে পরিষদের কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা আমাদের নেই। আমাদের না জানিয়ে সভা রেজুলেশন ছাড়াই তিনি প্রকল্পের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। ইউপি চেয়ারম্যান মনোজিত কুমার বালা বলেন; আমি নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে আইন জানিনা। তাৎক্ষণিকভাবে প্রকল্প কমিটি গঠনের নির্দেশনা পেয়ে রেজুলেশনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেছি। বরাদ্দকৃত টাকা যাতে চলে না যায় ব্যস্ততার কারণে মেম্বারদের জানানোর সুযোগ পাইনি। আমি মনে করেছি চেয়ারম্যান হিসেবে এটা করার আমার এখতিয়ার আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন; ঐ এলাকা থেকে আমাকে বেশি ভোট দিয়েছে। তাছাড়া মন্দিরগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ তাই ঐ অঞ্চলে সব প্রকল্প দিয়েছি। ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন বলেন; আমি শুনেছি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। আমি চেয়ারম্যানের জমা দেয়া কাগজপত্রগলো দেখবো।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ বলেন; রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা একটি অভিযোগ দিয়েছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।