আবুল কালাম আজাদ, ঝিকরগাছা (যশোর)
যড়যন্ত্র মামলায় গভীর নলকূপের লাইসেন্স স্থগিত হওয়ায় যশোর সদর উপজেলায় ছোটো মেঘলা মাঠে ১০০ বিঘা জমিতে তিন বছর ধরে বোরোধান চাষ বন্ধ রয়েছে। এতে এলাকার শতাধিক কৃষক সমস্যায় পড়েছেন। বাদী সাইফুজ্জামান মামলাটি আপোষনামা করেও বিষয়টি সুরাহায় টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদরের ছোটো মেঘলা ও ঝিকরগাছার মল্লিকপুর মাঠে ১০০ বিঘা জমি পতিত পড়ে রয়েছে। অথচ অন্যান্য মাঠে চলছে বোরোধান রোপণের ধুম। ছোটো মেঘলা গ্রামের আব্দুর রহিম ভূট্টো বলেন, এ মাঠের শতাধিক বিঘা জমিতে বোরোধান চাষের জন্য আমরা ২০১৭ সালে একটি গভীর নলকূপ বসানোর আবেদন করি।
পরবর্তিতে উপজেলা সেচ কমিটি যাচাই-বাছাই করে ২০১৯ সালে লাইসেন্স প্রদান করে। এতে বাধ সাধেন ঝিকরগাছার মল্লিকপুর গ্রামের সাইফুজ্জামান। অথচ, তার গভীর নলকূপটি রয়েছে দুই হাজার ফুট দূরে ও নিচু জায়গায়। ভুট্টো আরো বলেন, প্রচলিত সেচ আইনে বলা হয়েছে, একটি গভীর নলকূপ থেকে অপর নলকূপের দূরত্ব হবে এক হাজার ৯৪১ ফুট। তারপরও সাইফুজ্জামান ওই বছরেই ১৯৮৬-৮৭ সালের সেচ আইন উল্লেখ করে একটি ষড়যন্ত্র মামলা করে আমাদের লাইসেন্সটি স্থগিত করে দেন। সেই থেকে মাঠটিতে বোরোধান চাষ করতে পারছেন না কৃষকেরা। ছোটো মেঘলার কৃষক আবুল কালাম বলেন, সেচের পানির অভাবে তিন বিঘা জমিতে বোরোধান চাষ করতে পারছি না।
রবিউল ইসলাম বলেন, দুই বিঘা জমিতে বোরোধান চাষের জন্য বীজতলা লাগিয়েছিলাম কিন্তু সেচের ব্যবস্থা না থাকায় চারা লাগাতে পারছি না। সাফিয়া বেগম বলেন, আমার সম্বল তিন জমির সবটুকু এ মাঠে। কিন্তু নলকূপ বন্ধ থাকায় ধানের বড় আবাদ বোরো চাষ করতে পারছি না। তাই আমার সন্তানদের নিয়ে সমস্যায় আছি। কৃষক আব্দুস সাত্তার বলেন, আড়াই বিঘা জমির বোরো ধানে সারা বছর সংসার চলে। তবে তিন বছর তা চাষ করতে না পেরে কষ্টে আছি। ডিজেল ইঞ্জিনে সেচ দিতে খরচ বেশি পড়ায় তাতে লোকসানের সম্ভাবনা থাকে।
আব্দুর রহিম ভূট্টো বলেন, এলাকাবাসীর দাবির মুখে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সাইফুজ্জামান ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়ন পরিষদে আপোষনামা করেন মামলা তুলে নেবার জন্য। পরে সে সিদ্ধান্ত নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিকরগাছা থানায় বসাবসির কথা জানিয়েছিলেন সাইফুজ্জামান।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তিনি থানায় হাজির না হয়ে ছলচাতুরি করেন। এ বিষয়ে সাইফুজ্জামানের মোবাইলে একাধিকবার কল করে তাকে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি নন বলে কল কেটে দেন।